নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই
নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্টের পতনের পরে বাংলাদেশে খুব স্বাভাবিক ছিল যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের মালিকানা ফিরে পাবে। সেটাই ছিল প্রত্যাশা। এই প্রত্যাশা এখনো জনগণের আছে। সুতরাং সেটা (নির্বাচন) বিলম্ব হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আজ রোববার বিকেলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আয়োজনে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া গণতন্ত্রের অগ্রগতির কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে আলোচনা সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন ব্যতীত আর কোনো পথ নেই। অন্য কোনো পথ খুঁজতে গেলে সন্দেহের উদ্বেগ হবে। জনগণ হতাশ হবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আবারও মুখ থুবড়ে পড়বে। তিনি বলেন, আগামী দিনের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোনো দল, কোনো ব্যক্তি, কোনো গোষ্ঠী যদি মনে করে একমাত্র তাদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে এবং তাদের সিদ্ধান্তে আগামী দিনের বাংলাদেশ পরিবর্তন ও সংস্কার হবে, সেটা ভুল হবে।
সংস্কারের বিষয়ে বিএনপির আগে কেউ প্রস্তাব দেয়নি বলেও মন্তব্য করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, সাত বছর আগে খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ মাধ্যমে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন। সেখানে দুইবারের অধিক প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না, দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ হবে, এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য কী হবে—সেই প্রস্তাব আছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দুই বছর আগে যুগপৎ আন্দোলনে সঙ্গীদের নিয়ে ৩১ দফা সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে বিএনপি। শেখ হাসিনার পতনের আরও দেড় বছর আগে। সুতরাং হাসিনা–পরবর্তী বাংলাদেশে কী হবে, কী কী সংস্কারের প্রয়োজন হবে। এসব দেওয়া হয়েছে হাসিনার পতনের দেড় বছর আগে। সেই কথাগুলোই এখন আলোচিত হচ্ছে। এই আলোচনা বহু আগে হয়েছে। কীভাবে বাস্তবায়ন করব, সেটাও বলা হয়েছে। আগামী দিনে জাতীয় সরকারের মাধ্যমে এটা বাস্তবায়ন হবে। আমরা তো জাতীর কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সমস্যাটা কোথায়?
আমীর খসরু বলেন, কোনো গোষ্ঠী যদি মনে করে তাদের কোনো সংস্কার প্রস্তাব আছে, তাদের কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব আছে, তাদেরও জনগণের কাছে যেতে হবে। কিছু বিজ্ঞ মানুষ যদি মনে করেন, তাঁরা বসে সিদ্ধান্ত দেবেন আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে। যে যতই বিজ্ঞ হোক, যাঁরা দেশের মালিক, তাঁদের চেয়ে বিজ্ঞ কারও হওয়ার সুযোগ নেই। তাঁদের কোনো প্রস্তাব থাকলে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে সংসদে আসতে হবে। সুতরাং জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।
যে সব সংস্কারের বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে, সেই সংস্কারগুলোয় সময় লাগার কথা নয় বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, আগামী যে নির্বাচন হবে, নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন যাতে কারও মনে না জাগে। নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন জাগলে সেটা এই আন্দোলন, এই ১৫ বছর যে রক্ত দিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে—তাদের প্রতি বেইমানি করা হবে। বিগত দিনে যে ভুলগুলো হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে। আর কোনো দ্বিতীয় পথ এখানে নেই। দ্বিতীয় পথ বেঁচে নিতে চাইলে বাংলাদেশের জনগণ গ্রহণ করবে না।
Post Comment