রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ‘জাতীয় সমাবেশ’। দুপুর ২টায় মূল সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই উদ্যানে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী। সকাল ১০টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সমাবেশের প্রথম পর্ব, যার পরপরই পরিবেশিত হয় হামদ-নাত ও ইসলামি সংগীত।সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.
শফিকুর রহমান, এবং এতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা পর্যায়ক্রমে বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে। বেলা ২টার পর শুরু হবে মূল রাজনৈতিক পর্ব, যেখানে তুলে ধরা হবে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ও জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দাবি।গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীমুখী হয়েছেন জামায়াতপন্থী নেতা-কর্মীরা। আজ সকাল থেকে রাজধানীর নানা প্রান্ত থেকে মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে আগমন ঘটছে তাঁদের। মিছিলগুলোতে ‘সমাবেশ সফল হোক’—এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে শহরের বিভিন্ন সড়ক। এমনকি মেট্রোরেলেও জামায়াতের কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।গত বৃহস্পতিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত জানায়, তারা বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের এই সমাবেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, আমন্ত্রিত রাজনৈতিক নেতারাও এ সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।দলটির নেতাদের ভাষ্যমতে, স্বাধীনতা-উত্তর এই প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এত বড় পরিসরে সমাবেশ করছে জামায়াতে ইসলামী। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই সমাবেশকে ঘিরে দেখা দিয়েছে বাড়তি কৌতূহল। গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ সংগঠন) হামলার প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি হঠাৎ করে অস্থির হয়ে উঠেছে, আর এই প্রেক্ষাপটেই আয়োজিত হচ্ছে জামায়াতের এই সমাবেশ।দলটি জানিয়েছে, সমাবেশ সফল করতে তারা রেলপথ, সড়কপথ এবং নৌপথে বহুমুখী প্রস্তুতি নিয়েছে, যাতে সারাদেশ থেকে কর্মীদের ঢাকায় আনয়ন নিশ্চিত করা যায়।জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মূল দাবি হলো—সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন। এছাড়াও দলটি ‘জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন’, ‘মূলনৈতিক সংস্কার’, এবং ‘সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন’-এর দাবি তুলে ধরবে। এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ও দাবি স্পষ্ট করতে চায় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এই সমাবেশ বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
মন্তব্য (০)