গত রাতের ইতিহাদ স্টেডিয়াম যেন শুধু এক ব্যক্তির নামেই ছিল—কেভিন ডি ব্রুইনা। মাঠ থেকে গ্যালারি, ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে ডাগআউট, এমনকি সামাজিক মাধ্যমেও একটাই নাম বারবার ফিরে এসেছে—ডি ব্রুইনা। আর এমনটাও হওয়া স্বাভাবিক, যখন একজন কিংবদন্তি বিদায় নেন, পুরো শহর যেন তার সম্মানে দাঁড়িয়ে পড়ে।৩৩ বছর বয়সী এই বেলজিয়ান মিডফিল্ডার গত রাতে শেষবারের মতো ম্যানচেস্টার সিটির জার্সি গায়ে চাপালেন। তাঁর বিদায়ী মুহূর্তে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি কোচ পেপ গার্দিওলাও। নিজেই বললেন, ‘এটা আমাদের জন্য এক কষ্টের দিন।’২০১৫ সালে সিটির হয়ে যাত্রা শুরু করা ডি ব্রুইনা গত এক দশকে হয়ে উঠেছেন ক্লাবের মিডফিল্ডের হৃদস্পন্দন। তাঁর নেতৃত্বে সিটি জিতেছে ৬টি প্রিমিয়ার লিগ, ১টি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ২টি এফএ কাপ ও ৫টি লিগ কাপ। শুধু শিরোপাই নয়, ডি ব্রুইনা ছিলেন মাঠের সেই কারিগর, যাঁর পাসে তৈরি হতো গোল, আর দৃষ্টিনন্দন ফুটবলের পূর্ণতা।প্রিমিয়ার লিগে তাঁর গোল ৭২টি, আর অ্যাসিস্ট ১১৯টি—এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় তিনি মাঠে ঠিক কতটা কার্যকর ছিলেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তাঁর গোল সংখ্যা ১০৮টি এবং অ্যাসিস্ট ১৭৭ট
ি।বিদায় জানানোর আয়োজনে কোনো কমতি রাখেনি ম্যানচেস্টার সিটি। স্টেডিয়ামের আলো নিভিয়ে বড় পর্দায় দেখানো হয় ডি ব্রুইনার ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো। তারপর সেই অন্ধকার ভেদ করে আলোর রেখায় ভেসে আসেন তিনি নিজেই—সঙ্গে ছিলেন তাঁর পরিবার। দর্শকরা মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে যেন তাঁকে সম্মান জানায় এক আবেগঘন অভিবাদনে।সিটি ক্লাব ঘোষণা দিয়েছে, ইতিহাদ স্টেডিয়ামের বাইরে ডি ব্রুইনার একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে। এতে আরও পরিষ্কার, ক্লাব ইতিহাসে তাঁর অবদান কতটা অনন্য।ডি ব্রুইনা নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি আবেগ ও সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে খেলেছি। চেষ্টা করেছি সবাইকে আনন্দ দিতে। ক্লাবের ভেতরে-বাইরের মানুষদের প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ তারাই আমাকে সেরা করে তুলেছে।’গার্দিওলার কণ্ঠেও ছিল গভীর শ্রদ্ধা ও আবেগ, ‘১০ বছর পর কেউ যদি এমন সম্মান পায়, তাহলে বুঝে নিতে হবে সে শুধু ভালো খেলোয়াড় নয়, দারুণ মানুষও।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা তাকে খুব মিস করব।’ ডি ব্রুইনার বিদায়ে এক দশকের সফল অধ্যায়ের ইতি ঘটল। তবে তাঁর ছাপ রয়ে যাবে ক্লাবের ইতিহাসে, ভক্তদের মনে এবং ফুটবল প্রেমীদের হৃদয়ে।
মন্তব্য (০)