মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করায় ছাত্রীটির নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। অভিযুক্তের নাম মো.

আল-আমিন (৩৮)। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে সিঙ্গাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে।নিহত আজগর আলী ছিলেন স্থানীয় একজন দোকানদার। তার ছোট একটি চায়ের দোকান ছিল গ্রামের পাশেই। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের বাসিন্দা এবং এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত।কীভাবে ঘটলো মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড?পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত আজগর আলীর নাতনি একজন স্কুলছাত্রী, যার মা মারা যাওয়ার পর সে নানার বাড়িতেই বড় হচ্ছে। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে একাধিকবার তাকে উত্ত্যক্ত করতেন আল-আমিন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি।শেষ পর্যন্ত গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) আজগর আলী থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন, যা পরদিন তদন্ত শেষে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।এর পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, আল-আমিন কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে চড়ে আজগর আলীর দোকানে হাজির হন। দোকান থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে এনে তাঁকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে বেপরোয়া হামলা চালানো হয়। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায় তারা।পরিবার ও প্রতিবেশীরা তাঁকে প্রথমে সিঙ্গাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলে রাত সাড়ে নয়টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।কে এই আল-আমিন?স্থানীয়রা জানান, আল-আমিন এলাকায় পরিচিত একজন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী। পূর্বেও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু বিচারের মুখোমুখি হয়নি।নিহত আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলামসহ স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, থানায় মামলা করায় প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।পুলিশের অবস্থানসিঙ্গাইর থানার ওসি জে ও এম তৌফিক আজ গণমাধ্যমকে জানান, “স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে আল-আমিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আজগর আলীকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছি। আল-আমিন ও তার সহযোগীরা বর্তমানে পলাতক। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডের মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আমরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছি।”