২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল, রাজধানী ঢাকার রমনা বটমূলে অনুষ্ঠিত পয়লা বৈশাখের আনন্দঘন অনুষ্ঠানে ঘটে যায় ভয়াবহ এক ট্র্যাজেডি। বোমা হামলার সেই ঘটনায় প্রাণ হারান ১০ জন, আহত হন বহু মানুষ। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা এই আলোচিত মামলার হাইকোর্ট পর্যায়ের রায়ে অবশেষে বড় পরিবর্তন এসেছে।সাত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা কমাল হাইকোর্টআজ ১৩ মে, মঙ্গলবার, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন। এতে দেখা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামির মধ্যে একজনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন, বাকি ছয়জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডে রূপান্তর করা হয়েছে।প্রধান আসামি তাজউদ্দিনের সাজা কমে যাবজ্জীবনসাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মো.
তাজউদ্দিন, যিনি এই মামলায় অন্যতম প্রধান আসামি ছিলেন, তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে হাইকোর্ট তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন।মুফতি হান্নানের আপিল পরিসমাপ্ত ঘোষণামামলার আরেক আলোচিত আসামি মুফতি আব্দুল হান্নান, যিনি আগে থেকেই সিলেটের গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ফাঁসি কার্যকর হয়েছেন, তার আপিল হাইকোর্ট পরিসমাপ্ত ঘোষণা করেছেন।বাকি ছয় আসামির নতুন দণ্ডমৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি ছয় আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। এছাড়া, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহাদাতউল্লাহ জুয়েলের দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। বাকি তিনজনের সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে নির্ধারণ করা হয়েছে।দুই আসামির মৃত্যুজনিত কারণে আপিল বাতিলমামলার বিচারিক প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় দুই আসামি মারা যাওয়ায়, তাদের আপিলকে পরিসমাপ্ত ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার সময়কাল২০১৪ সালে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়, এরপর থেকেই চলতে থাকে আইনি লড়াই। ২০২3 সালের ৮ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়, এবং ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (CAV) রাখা হয়। এরপর ৩০ এপ্রিল আদেশের জন্য তোলা হয়, এবং ৮ মে আংশিক রায় ঘোষণা শেষে আজ চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হলো। রমনা বটমূল বোমা হামলা মামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। আজকের হাইকোর্টের রায় বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
মন্তব্য (০)