বাংলাদেশের পেসমাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান আইপিএলের মঞ্চে দীর্ঘদিন ধরে নিজের দক্ষতা ও দারুণ বোলিং দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে আসছেন। ২০১৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর পরের বছরই আইপিএলে পা রাখেন মোস্তাফিজ। প্রথমবারের মতো সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলতে নামেন এবং মাত্র ১৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে দেখিয়ে দেন বিশ্বমানের বোলিং।মোস্তাফিজের আইপিএল ক্যারিয়ারে ওঠানামা থাকলেও, তার বোলিংয়ের কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত রয়েছে যা প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমীর হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে। চলুন দেখে নেই তার সেরা পাঁচটি পারফরম্যান্স:১. ৪/২৯: চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, ২০২৪ চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে ১৭তম আইপিএল মৌসুমের প্রথম ম্যাচে মোস্তাফিজের বোলিং ছিল দারুণ। চেন্নাইয়ের শক্তিশালী ব্যাটসম্যানদের মাঝে ফাফ ডু প্লেসির মতো ক্রিকেটারকে কাটারে ফাঁসিয়েছেন তিনি। পরে বিরাট কোহলি ও ক্যামেরন গ্রিনকে ফেরানোর মাধ্যমে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। এই অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য তিনি ম্যাচসেরার পুরস্কার পান।২. ৩/১৮: দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স, ২০২২ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে, কুলদীপ যাদবের সঙ্গেও সমান তালে লড়াই করে মোস্তাফিজ কলকাতার মধ্যবোলিং ভাঙার কাজ করেন। নিতীশ রানা, রিঙ্কু সিং এবং টিম সাউদির উইকেট তুলে নিয়ে মাত্র ১৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করে দলের জয় নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা নেন। যদিও ম্যাচসেরার পুরস্কার কুলদীপ পেয়েও মোস্তাফিজের পারফরম্যান্সও প্রশংসিত হয়।৩.

৩/১৬: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, ২০১৬ হায়দরাবাদের হয়ে ম্যাচে মোস্তাফিজ যেভাবে টপ অর্ডার ভাঙলেন এবং হার্দিক পান্ডিয়াকে মাত্র ৭ রানে ফিরিয়ে আনলেন, তা ছিল বিশেষ মুহূর্ত। টিম সাউদি ও মিচেল ম্যাকক্লেনাহানকেও আউট করে ৮৫ রানের বড় ব্যবধান নিশ্চিত করেন মোস্তাফিজ, যা দলের জয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।৪. ৩/২০: রাজস্থান রয়্যালস বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, ২০২১ রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে খেলতে নামা মোস্তাফিজ শুরুতেই মনীশ পান্ডেকে ৩১ রানে ফেরিয়ে হায়দরাবাদ দলের ওপেনিং ঝড়ে প্রথম বড় ধাক্কা দেন। পরবর্তীতে নবী ও রশিদ খানের উইকেটও তুলে নিয়ে চাপ সৃষ্টি করেন। যদিও দল শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হারলেও মোস্তাফিজের বোলিং ছিল দুর্দান্ত।৫. ৩/২৩: দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম গুজরাট টাইটানস, ২০২২ প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই ম‍্যাথু ওয়েডকে আউট করে দিল্লির হয়ে শুরু করেন মোস্তাফিজ। এরপর তেওয়াটিয়াকে থামিয়ে দেন রান তাড়া কঠিন করে তোলেন। শুভমান গিলের দুর্দান্ত ইনিংস সত্ত্বেও গুজরাট ১৭১ রানের বেশি করতে পারেনি। মোস্তাফিজ ২৩ রানে ৩ উইকেট শিকার করে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মোস্তাফিজ আইপিএলে তার দ্রুতগতির বোলিং ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দিয়ে দলের সেরা অস্ত্র হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ থেকে শুরু করে দিল্লি ক্যাপিটালস পর্যন্ত খেলতে গিয়ে তিনি প্রতিবারই ম্যাচের ভাগ্য বদলানোর মতো বোলিং করেন। ২০২৪ সালে আবারও আইপিএলে ফিরে এসে তার অভিজ্ঞতা দলের জন্য বড় শক্তি। আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলোতে মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স কেমন হয়, সেটাই এখন ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষার বিষয়।