চ্যাম্পিয়নস লিগের এবারের ফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি) ইতিহাস গড়েছে একাধিক দিক থেকে। রেকর্ড বইয়ের পাতা ভরিয়ে দিয়েছে নানা অপ্রত্যাশিত ও অভাবনীয় কীর্তিতে। চলুন দেখে নিই সেই চমকে দেওয়া সব রেকর্ড:১৬৮ ম্যাচ খেলে প্রথম শিরোপা! ইউরোপিয়ান কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলিয়ে পিএসজি ১৬৮টি ম্যাচ খেলে অবশেষে প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তোলে। এতগুলো ম্যাচ খেলে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড আর কোনো ক্লাবের নেই।ফাইনালে বারবার হোঁচট—ইন্টার মিলান শেষ পাঁচটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের মধ্যে চারবার হেরেছে ইন্টার মিলান। ইতিহাসে শুধু জুভেন্টাস (৭ বার), বেনফিকা (৫ বার) ও বায়ার্ন মিউনিখ (৫ বার) ইন্টার মিলানের চেয়ে বেশি বার রানার্সআপ হয়েছে।ট্রেবল জিতে ইতিহাসে জায়গা পিএসজির চলতি মৌসুমে লিগ, কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে ট্রেবল জয়ের কীর্তি গড়েছে পিএসজি। এটি ইউরোপে নবম ক্লাব হিসেবে ট্রেবল জয়ের নজির। আর ফ্রান্সের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো ক্লাব এই অর্জনে পৌঁছাল। এর আগে ১৯৯৩ সালে মার্শেই চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল, এরপর প্রথম ফরাসি ক্লাব হিসেবে পিএসজি ইউরোপ সেরার মুকুট জিতল।লুইস এনরিকে: ট্রেবলের ডাবল চ্যাম্পিয়ন কোচ স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকে দ্বিতীয়বার ট্রেবল জিতলেন। এর আগে ২০১৪-১৫ মৌসুমে বার্সেলোনার কোচ হিসেবে এই কীর্তি অর্জন করেছিলেন। তাঁর আগে এই দলে ছিলেন কেবল পেপ গার্দিওলা (২০০৮-০৯ বার্সা ও ২০২২-২৩ ম্যান সিটি)।৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে ফাইনাল জয় ইন্টার মিলানকে ফাইনালে ৫-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এত বড় ব্যবধানে জয় আগে কখনো দেখা যায়নি।দেজ

িরে দুয়ে: ফাইনালের নায়ক পিএসজির তরুণ ফরোয়ার্ড দেজিরে দুয়ে ফাইনালের প্রথম তিনটি গোলে সরাসরি অবদান রেখে অন্যতম বিস্ময়কর পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। প্রথম গোল করিয়েছেন আশরাফ হাকিমিকে দিয়ে, এরপর নিজেই জোড়া গোল করেছেন।ইন্টার: ফাইনালে ৫ গোল হজম করা প্রথম দল ইউরোপিয়ান কাপ/চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে ফাইনালে ৫ গোল হজম করা প্রথম দল এখন ইন্টার মিলান। এমন দৃশ্য শেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৬২ সালে, যখন বেনফিকা ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে।তিন ‘সিনিয়র’ একাদশে—ইন্টার মিলানের আরেক রেকর্ড চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে একাদশে একসঙ্গে তিনজন ৩৫ বা তার বেশি বয়সী খেলোয়াড় মাঠে নামিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে ইন্টার মিলান। সেই তিনজন হলেন—ইয়ান সোমার, ফ্রানচেস্কো অ্যাকারবি ও হেনরিখ মিখিতারিয়ান।সবচেয়ে কম বয়সে ফাইনালে অ্যাসিস্ট দেজিরে দুয়ে মাত্র ১৯ বছর ৩৬২ দিন বয়সে অ্যাসিস্ট করে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অ্যাসিস্ট করার রেকর্ড গড়েছেন। তিনি ভেঙে দিয়েছেন জুড বেলিংহামের পুরোনো রেকর্ড (২০ বছর ৩৩৮ দিন)।ডিফেন্ডার হাকিমির দুর্দান্ত রেকর্ড চলতি মৌসুমে আশরাফ হাকিমি চ্যাম্পিয়নস লিগে ৪ গোল ও ৫ অ্যাসিস্ট মিলিয়ে মোট ৯টি গোলে অবদান রেখেছেন। এটি একটি মৌসুমে কোনো ডিফেন্ডারের সর্বোচ্চ গোল-অবদানের যৌথ রেকর্ড, এর আগে এই রেকর্ড ছিল ইয়ান হার্টের (২০০০-০১ মৌসুম)। শেষ কথা: চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল মানেই উত্তেজনা ও ইতিহাস গড়ার মুহূর্ত। তবে এবারের আসরটি যেন রেকর্ডবইয়ে একাধিক নতুন অধ্যায়ের জন্ম দিয়ে গেল, আর পিএসজি হয়ে উঠল সেই ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু।