ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

অন্যান্য

অভ্যুত্থান-পরবর্তী জাতীয় বাজেট ও পরিবেশ-গ্রাফিতি: একটি জরুরি বিবেচনা

অভ্যুত্থান-পরবর্তী জাতীয় বাজেট ও পরিবেশ-গ্রাফিতি: একটি জরুরি বিবেচনা Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

জাতীয় বাজেট মানে রাষ্ট্রের দর্শন—এই কথাটি এখন কেবল অর্থনীতির পরিভাষা নয়, বরং আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। প্রতিটি টাকার হিসেব যেন দেশের প্রতিটি প্রাণের প্রতিনিধিত্ব করে, সে দাবি আজ আরও জোরালো হয়েছে। আগামী বাজেট ঘোষণা সামনে রেখে পরিবেশবাদী এবং মানবিক চিন্তাবিদরা প্রশ্ন তুলেছেন—এই বাজেটে কি শুধু মানুষের আয় ও ব্যয়, মুনাফা ও ভর্তুকি, কর ও ছাড়ের হিসেব থাকবে, নাকি বাঘ-হাতি-মৌমাছি-পাহাড়-নদীরও ‘মর্যাদা’ প্রতিফলিত হবে?বাজেটের বিস্তার, পরিবেশের সংকোচন১৯৭২ সালের প্রথম বাজেট থেকে আজকের সুদীর্ঘ যাত্রায় বাজেটের আকার বেড়েছে, প্রকল্প বেড়েছে, অর্থ বেড়েছে। কিন্তু কমেছে বন, জলাভূমি, পাহাড়, প্রাণবৈচিত্র্য এবং জনগণের সুস্থ বাসযোগ্য পরিবেশ। পরিবেশ রক্ষার কথা বলা হয় বাজেট পরবর্তী আলোচনায়, কিন্তু বরাদ্দ বা বাস্তবায়নে তার প্রতিফলন প্রায় অনুপস্থিত।প্রাণ ও প্রকৃতির ‘হিস্যা’ কোথায়?বছরের পর বছর কৃষিতে ভর্তুকির নামে রাসায়নিক বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। একদিকে মৌমাছি হারাচ্ছে মধু সংগ্রহের পথ, অন্যদিকে বন্যপ্রাণীদের বসবাস ধ্বংস হচ্ছে উন্নয়নের নামে প্রকল্প বাস্তবায়নে। বহুজাতিক কোম্পানির চাহিদায় তৈরি হচ্ছে রাসায়নিক কৃষিনীতি, কিন্তু পরিবেশ রক্ষার কোনো সর্বব্যাপী উদ্যোগ নেই।জানেন কি?জাতীয় বাজেটে ‘বাঘ বাড়ানো প্রকল্প’ থাকলেও সুন্দরবনের জটিল বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষায় বরাদ্দ থাক

ে না।নদী প্রকল্পে নাব্যতা, দখল ও দূষণ একইভাবে বিবেচিত হয় না।পরিবেশ মন্ত্রণালয় ব্যতীত অন্য মন্ত্রণালয়গুলোতে পরিবেশ ভাবনা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।‘সবুজ অর্থনীতি’ না হয়ে উঠলে চলবে না রাষ্ট্রনীতিআজ প্রয়োজন সামগ্রিক বাজেট পরিচালনায় পরিবেশবান্ধব মনোভাব। কেবল ‘পরিবেশ মন্ত্রণালয়’-এর ওপর দায়িত্ব না চাপিয়ে, কৃষি, পানি, শিল্প, শিক্ষা, স্বরাষ্ট্র, সংস্কৃতি—সব মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়নে পরিবেশ ভাবনার ছাপ থাকা জরুরি।পরিবেশবান্ধব বাজেটের কিছু প্রস্তাবনা: প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করা বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদের নিরাপত্তায় নির্ধারিত বাজেট প্লাস্টিক প্রতিস্থাপনে পাটজাত পণ্য ও বিকল্প শিল্পে বরাদ্দ বাড়ানো প্রতিবেশ সংকটাপন্ন অঞ্চলগুলোর জন্য পৃথক বরাদ্দ রাসায়নিক কৃষি থেকে ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক ও টেকসই কৃষিতে রূপান্তরপরিশেষে বলা যায়—এই রাষ্ট্র কেবল মানুষের নয়। এটি পাখি, পতঙ্গ, বাঘ, গাছ, নদী ও পাহাড়েরও। তাই জাতীয় বাজেট যেন মানুষসহ ‘সর্বপ্রাণ’-এর বাজেট হয়।জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের যে ‘ইনক্লুসিভনেস’-এর বার্তা দিয়েছে, তা অনুসরণ করে আমরা চাই প্রাণ-প্রকৃতিবান্ধব এক বাজেট ঘোষণা হোক—এবারের বাজেট হোক প্রকৃতির বন্ধু। আপনি কি মনে করেন জাতীয় বাজেটে পরিবেশ ভাবনার প্রতিফলন বাড়ানো উচিত? মন্তব্য করুন নিচে।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর