ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য-এর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন এবং প্রশাসনের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেছেন।মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ভিসি চত্বরের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ তুলে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন।সমাবেশ চলাকালীন সময়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা “দফা এক দাবি এক, ভিসির পদত্যাগ”, “আমার ভাইয়ের লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে”, “নয় মাসে দুই খুন, ভিসি-প্রক্টরের অনেক গুণ”—এমন জোরালো স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখর করে তোলেন।ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির সমাবেশে বলেন, “এই অন্তর্বর্তী সরকার কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য দায়িত্বে আসেনি। প্রশাসনের এ ধরনের ব্যর্থত
া মেনে নেওয়া যায় না।”এ সময় ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি, অতি দ্রুত উপাচার্য ও প্রক্টরকে সরিয়ে দিন। অন্যথায় আমরা ইন্টারিম সরকারকেই প্রতিরোধ করতে বাধ্য হব।”ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে আরেকটি বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে তারা তাঁদের দাবির পক্ষে আরও শক্ত অবস্থান উপস্থাপন করবেন।প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায়।ছাত্রসমাজে এই হত্যাকাণ্ড গভীর শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার অভাব, প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়েছেন সাম্য। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের জবাবদিহিতা ও কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করছেন।
মন্তব্য (০)