সিলেটে রাজনৈতিক টানাপোড়েন: মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মতাদর্শিক মোড় ও বিএনপির চেতনায় ধসসিলেট প্রতিনিধিসিলেটের রাজনৈতিক প্রাঙ্গণে তীব্র আলোড়ন তৈরি করেছে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্য। ঐতিহ্যবাহী বিএনপি ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই নগরীতে এখন স্পষ্ট বিভ্রান্তি ও বিভাজনের ছায়া। মেয়রের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে দেখা যাচ্ছে মতাদর্শিক বিচ্যুতি, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে কেবল কৌশলগত নয়, বরং গভীর ব্যক্তিকেন্দ্রিক হিসাবেরই প্রতিচ্ছবি।বিএনপির ঘরেই অনাস্থার সুরদীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনৈতিক ব্যানার তলে থেকে নির্বাচনী মাঠে সফলতা কুড়িয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তাঁর দৃষ্টিগোচর হওয়া, বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ এবং রাজনৈতিক বক্তব্যে দলীয় নীতি থেকে বিচ্যুতি—এসব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাঁর প্রতি বিএনপির আস্থার স্থায়িত্ব নিয়ে।দলের ভেতরে এখন গুঞ্জন, এই ‘রাজনৈতিক কৌশল’ আসলে ব্যক্তি-স্বার্থে প্রভাব বিস্তারের একটি প্রয়াস। ফলে দলের মধ্যে অনিশ্চয়তা, সন্দেহ এবং অভ্যন্তরীণ সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে।সিলেট-১ আসনে ধাক্কা খেল ঐক্যবিশেষ করে সিলেট-১ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো আজ বেশ নড়বড়ে। স্থানীয় নেতারা
প্রকাশ্যে না বললেও, দলীয় কর্মীদের একাংশ মনে করেন, মেয়র আরিফুল “দুই পক্ষের খেলা খেলছেন”—একদিকে বিএনপির প্রতীকে নেতৃত্বে, অন্যদিকে প্রতিপক্ষের ছায়ায় নিজের অবস্থান সুরক্ষিত রাখার চেষ্টায়।ফলে মাঠ পর্যায়ে দ্বিধা, বিভ্রান্তি ও নেতৃত্ব নিয়ে অনাস্থার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এটি শুধুই সাংগঠনিক দুর্বলতা নয়, বরং দলের আদর্শিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।আন্দোলনের নগরীতে নিরবতাসিলেটের রাজপথ এক সময় ছিল বিএনপির স্লোগানে মুখর, সভা-সমাবেশে উদ্দীপ্ত। কিন্তু এখন সেই চিত্র পাল্টেছে। বহু কর্মী ও সমর্থক দলের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছেন—বিশেষ করে নেতাদের অবস্থান অস্পষ্ট হয়ে পড়ায়। রাজনীতিতে বিশ্বাসের সংকট তৈরি হয়েছে, যা আন্দোলন ও নির্বাচনী প্রস্তুতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।সামনে এগোতে চাইলে চাই স্বচ্ছতা ও ঐক্যবিএনপির জন্য এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—দলের অভ্যন্তরীণ বিভেদ নিরসন, আদর্শিক স্পষ্টতা ও নেতৃত্বের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। জনগণের আস্থা পুনর্গঠন না করলে সিলেটের মতো শক্ত ঘাঁটি থেকেও পিছিয়ে পড়তে হবে।মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাম্প্রতিক অবস্থান বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে সতর্ক সংকেত দিচ্ছে। নেতৃত্ব ও আদর্শের মধ্যে ফারাক হলে সংগঠন দুর্বল হয়—এ বাস্তবতা বিএনপিকে এখন অনুধাবন করতেই হবে।
মন্তব্য (০)