ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

ক্রিকেট

এত দিন কোথায় ছিলেন আমিনুল, কী করতেন তিনি? বিসিবিতে আসার আগে তাঁর বিস্ময়কর সফর

এত দিন কোথায় ছিলেন আমিনুল, কী করতেন তিনি? বিসিবিতে আসার আগে তাঁর বিস্ময়কর সফর Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। প্রশ্নোত্তর পর্বে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে বললেন, "আমার স্কিল সেট এখন একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ। আমি যেমন ভারত-পাকিস্তানের মতো ক্রিকেট পরাশক্তি দেশে কাজ করেছি, তেমনি তাজিকিস্তান কিংবা উজবেকিস্তানের মতো অপরিচিত জায়গায়ও ক্রিকেট বিস্তারে ভূমিকা রেখেছি।"তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান—এই দেশগুলোর নাম শুনে অবাক হওয়াই স্বাভাবিক, কারণ ক্রিকেটের সঙ্গে এদের সম্পর্ক খুবই সীমিত। তবে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-এর ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে আমিনুলের দায়িত্ব ছিল ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া।চীন, হংকং, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর—এই দেশগুলোতে হাই পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম, কোচিং উন্নয়ন, এবং গঠনমূলক ক্রিকেট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। এসিসি ও আইসিসির যৌথ উদ্যোগে এইসব অঞ্চলে ক্রিকেটের ভিত্তি গড়ে তুলেছেন আমিনুল।এখনো তিনি সেই কাজের সঙ্গেই যুক্ত। এই মাসেই তাঁর আইসিসির সঙ্গে আগের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে, তবে বিসিবির দায়িত্ব নেওয়ার আগে আরও এক বছরের নতুন চুক্তি করে এসেছেন। ফলে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর হয়তো আবার আইসিসিতে ফিরে যেতে পারেন, যদিও বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেও দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর বাংলাদেশেই কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন আমিনুল। কোচিংয়ে লেভেল-১, লেভেল-২, এবং লেভেল-৩ কোর্স সম্পন্ন করে এটি পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। এমনকি ঢাকার প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন করানোর কৃতিত্বও রয়েছে তাঁর।অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমিনুলের সংযোগ দীর্ঘদিনের

, নব্বইয়ের দশকে তাঁর স্ত্রী পড়াশোনার জন্য সেখানে গেলে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয়। ২০০৩ সালে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন। সেখানে কোচিং পেশার মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে আইসিসিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যোগ দেন।এই সময়েই তিনি বায়োমেকানিকস, খেলোয়াড়দের মানসিক প্রস্তুতি, দৃষ্টিশক্তি উন্নয়ন, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরির মতো বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করেন। এসব দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ক্রিকেটে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।তবে সংগঠক হিসেবে এবারই প্রথম বড় মঞ্চে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন এক অসাধারণ ক্রিকেটার। প্রায় ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশকে, আর সেই বিশ্বকাপেই পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চে চমক দেখায় তাঁর নেতৃত্বে।২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে তিনিই গড়েছিলেন দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির ইতিহাস। ১৩টি টেস্টে করেছেন ৫৩০ রান, যার মধ্যে রয়েছে একটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটি।ওয়ানডেতে ৩৯ ম্যাচে করেন ৭৯৪ রান, যদিও শতক পাননি, তবে তিনটি ফিফটি রয়েছে তাঁর নামের পাশে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪০ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ১৯৪০ রান, যেখানে আছে চারটি সেঞ্চুরি।বিসিবির দায়িত্ব নিচ্ছেন এমন এক সময়, যখন সংগঠনের অভ্যন্তরীণ নানা সংকট ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বাংলাদেশ ক্রিকেট। এর আগের সভাপতি ফারুক আহমেদও ছিলেন সাবেক ক্রিকেটার, তবে মাত্র ৯ মাসেই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এখন ফারুকের স্থলাভিষিক্ত হয়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে যাচ্ছেন আমিনুল ইসলাম।তাঁর অভিজ্ঞতা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্জিত দক্ষতা ও ক্রিকেট প্রশাসনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি হয়তো বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নিতে পারে। সময়ই বলে দেবে, নতুন এই নেতৃত্ব কতটা কার্যকর হবে।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর