বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন ফারুক আহমেদ। বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে পদত্যাগের জন্য। যদিও তিনি স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছাড়ছেন কি না, সেই প্রশ্ন এখনো স্পষ্ট নয়।আজ রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের বাসভবনে ফারুক আহমেদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ক্রীড়া উপদেষ্টা তাঁকে বোর্ডে ‘পরিবর্তনের বার্তা’ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।ফারুক নিজেই প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে, কিন্তু বিস্তারিত আলোচনার বিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে এই বৈঠক থেকেই স্পষ্ট, বিসিবির নেতৃত্বে পরিবর্তনের পরিকল্পনা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।পটপরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় ফারুকের আগমন২০২৩ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (NSC) থেকে মনোনীত দুই পরিচালক—জালাল ইউনুস ও সাজ্জাদুল আলমকে বাদ দেওয়া হয়। তাঁদের জায়গায় এনএসসি থেকে মনোনয়ন পান ফারুক আহমেদ ও নাজমূল আবেদীন। পরে পরিচালকদের ভোটে ফারুক বিসিবির সভাপতি নির্বাচিত হন।সরকারি হস্তক্ষেপে আইসিসির কড়া অবস্থানআইসিসি ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপকে অনুমোদন করে না। ফলে, সরকার সরাসরি বিসিবি সভাপতিকে অপসারণ করতে পারে না, যেহেতু পদটি নির্বাচিত। তবে ফারুক যেহেতু এনএসসি মনোনীত পরিচালক, সেই জায়গায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে। কিন্তু তিনি নিজে পদত্যাগ না
করলে, সরকারের হস্তক্ষেপ আইসিসির দৃষ্টিতে ‘বহিরাগত চাপ’ হিসেবে ধরা পড়তে পারে।জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার মত দেশগুলো অতীতে এ কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটকেই সংকটে ফেলতে পারে।ফারুক কিছু সময় চেয়েছেন চিন্তার জন্যবিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ফারুক আহমেদ বিষয়টি নিয়ে আরও দু-এক দিন ভেবে দেখবেন। যদি তিনি পদত্যাগ করেন, তাহলে সেটা হবে তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত।পরবর্তী সভাপতি হিসেবে সামনে আসছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল?কয়েক দিন ধরেই চলছে গুঞ্জন—জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল হতে পারেন অন্তর্বর্তী সভাপতি। কারণ, আগামী মাসে তাঁর আইসিসিতে চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, তিন মাসের জন্য আমিনুলকে বোর্ডের দায়িত্ব দিয়ে অক্টোবরের নির্বাচনের পথ খুলে দেওয়া হবে।তবে বিসিবির বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো ‘অন্তর্বর্তী কমিটি’ গঠন করার সুযোগ নেই। অন্যদিকে, আমিনুলকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) করার কথাও উঠেছে। তবে জানা গেছে, তিনি এই পদের জন্য বর্তমান সিইও’র দ্বিগুণ বেতন (প্রায় ১২ লাখ টাকা) দাবি করেছেন। আজ রাতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, আমিনুল ফোনে পাওয়া যাননি। তবে ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে ফারুকের আলোচনায় আমিনুল উপস্থিত ছিলেন না, এটা নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
মন্তব্য (০)