ডিউক বল নিয়ে আবারও বিতর্কের মুখে ইংল্যান্ড–ভারত টেস্ট সিরিজ। লর্ডসে চলমান টেস্টের দ্বিতীয় দিনে মাত্র ১০.৩ ওভার পর নতুন বল বদলে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ভারতীয় দল। এই ঘটনাকে ঘিরে মাঠে ও মাঠের বাইরে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।ভারতীয় পেসার যশপ্রীত বুমরা প্রথম দফার নতুন বল হাতে নিয়ে দুর্দান্ত বোলিং করছিলেন। মাত্র ১৪ বলের মধ্যেই ৩ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ বল বদলানোর সিদ্ধান্তে সেই গতি আর ধার দুটোই যেন হারিয়ে যায়। ইংল্যান্ডের ৭ ও ৯ নম্বর ব্যাটাররা সেই সুযোগে পুরো সেশন পার করে দেন উইকেট না হারিয়ে।ইএসপিএনক্রিকইনফোর পরিসংখ্যান বলছে, প্রথম বলটি গড়পড়তা ১.৮৬৯ ডিগ্রি সুইং করছিল এবং সিম মুভমেন্ট ছিল ০.৫৭৯ ডিগ্রি। কিন্তু পরিবর্তিত বলটির সুইং নেমে আসে মাত্র ০.৮৫৫ ডিগ্রিতে, যদিও সিম কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ০.
৫৯৪ ডিগ্রিতে। কার্যকারিতার এমন তারতম্যে স্পষ্ট যে, বল বদলের পর ভারতীয় বোলারদের আধিপত্যে ছেদ পড়ে।ভারতীয় অধিনায়ক শুভমান গিল বলের মান নিয়ে মাঠেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে, আম্পায়ারদের দেওয়া ‘নতুন বল’ আসলে আগের বলটির চেয়েও বেশি পুরোনো ছিল। এমনকি বদলানো বলটিও মাত্র ৮ ওভার পর আবার বদল করতে হয়!এই বল পরিবর্তন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান সাবেক কিংবদন্তিরাও। ধারাভাষ্যকক্ষ থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুনীল গাভাস্কার। তিনি বলেন, “এই বল ১০ ওভার খেলা বল নয়, এটা অন্তত ২০ ওভারের পুরোনো বলের মতো দেখাচ্ছে। যদি এই ঘটনা ভারতে ঘটত, তাহলে ব্রিটিশ মিডিয়া ব্যাপারটা নিয়ে বিশাল হৈচৈ তুলত।”ডিউক বল নিয়ে অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। ২০২০ সাল থেকেই অনেক ক্রিকেটার এর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইংল্যান্ডের সাবেক পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড এক্স (সাবেক টুইটার)–এ লেখেন, “প্রতিটি ইনিংসেই বল বদলের ঘটনা ঘটছে, এটা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। ডিউকসের সত্যিই সমস্যা আছে, এটা তারা ঠিক করুক। একটা বল ৮০ ওভার টিকবে না কেন?”স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন বলেন, “ম্যাচ শুরুর আগেই দুই অধিনায়ক ডিউক বলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এই ম্যাচে তো এক সেশনেই দুবার বল বদলানো হলো! এটা সমস্যা না হলে কী?” তিনি আরও বলেন, “আমরা হয়তো এখন এমন ‘পারফেক্ট’ একটা বল চাইছি, যা ৮০ ওভার পর্যন্ত অক্ষত থাকবে। কিন্তু বল তো পুরোনো হবেই, সেটা বাস্তবতা। তাই বলে এলোমেলোভাবে বল বদলে ফেলা সমাধান নয়।” নাসের শেষে যোগ করেন, “বুমরা যখন প্রথম ঘণ্টায় বল করছিল, তখন একেবারে অপ্রতিরোধ্য ছিল। হঠাৎ দেখি বল বদলানো হচ্ছে! যে বল দিয়ে এত ভালো বোলিং হচ্ছিল, সেটা রেখে কোনো যুক্তিতেই এলোমেলোভাবে নতুন বল নেওয়া যায় না।”
মন্তব্য (০)