শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের চূড়ান্ত ও নির্ধারক ম্যাচ। দুই দল এখন সমতায়—১-১ ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের দ্বারপ্রান্তে। আর আজ যে দল জিতবে, সিরিজের ট্রফিটাও উঠবে তাদের হাতেই।সবুজ পাহাড়ের মাঝে উত্তেজনার আগুনপাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, যার চারপাশ ঘেরা সবুজ পাহাড় ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত প্রেসবক্স থেকে মাঠের দৃশ্য দেখতে দেখতে দৃষ্টি চলে যায় গ্যালারি আর পাহাড়ের দিকে। তবে আজকের ম্যাচের গুরুত্ব এতটাই বড় যে সৌন্দর্য নয়, চোখ রাখতে হবে বাইশ গজের ভেতরকার নাটকে।সন্ধ্যার আলোয় প্রস্তুতি, নেপথ্যে কৌশলগতকাল রাতে স্টেডিয়ামে যখন ফ্লাড লাইটে ঝলমল করছিল পুরো মাঠ, তখন বাংলাদেশ দল অনুশীলনে ব্যস্ত। তাদের আগে অনুশীলন সেরে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা দল। অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ দলের ওপেনার পারভেজ হোসেন।“প্রথমে গিয়ে উইকেট দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে,” বললেন পারভেজ, যার এখনো পাল্লেকেলের উইকেট দেখা হয়নি। তবে দলের পুরোনো সদস্যদের অভিজ্ঞতা থেকে জানানো হয়েছে—এই উইকেট রানপ্রসবা, ব্যাটসম্যানদের জন্য সহায়ক। একই ধারণা দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ তিলিনা কান্দাম্বিও।নাজমুলের খেলা নিয়ে কৌতূহলদ্বিতীয় ওয়ানডেতে চোট পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত আজকের ম্যাচে খেলবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও তিনি শেষ ২৪ ঘণ্টা চোটমুক্তভাবেই কাটিয়েছেন। পারভেজ জানালেন, “নাজমুল ভালো আছেন।”তবে যদি শেষ মুহূর্তে তিনি খেলতে না পারেন, তাহলে দলে দেখা যেতে পারে মোহাম্মদ নাঈমকে। আর একটি পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে—পেসার হাসান মাহমুদের জায়গায় ফিরতে পারেন তাসকিন আহমেদ।নাজ
মুলের স্মৃতি, আত্মবিশ্বাসের জ্বালানিএই মাঠেই ২০২৩ সালের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ মাত্র ১৬৪ রান করেছিল। তবুও সেই ম্যাচে একাই দাঁড়িয়ে ছিলেন নাজমুল—৮৯ রানের সাহসী ইনিংস।তবে নাজমুলের আসল কীর্তি এই মাঠেই ২০২১ সালের টেস্টে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি (১৬৩ রান)। ওই ম্যাচ ড্র করতে বড় অবদান ছিল তাঁর। সেই টেস্টে মুমিনুল (১২৭) ও তামিম (৯০) রান করে সঙ্গ দিয়েছিলেন।এসব স্মৃতি নিশ্চিতভাবেই নাজমুলের আত্মবিশ্বাসে বাড়তি রসদ যোগাবে। আর দলও চায় তিনি থাকুন, কারণ এই ভেন্যুতে তাঁর পারফরম্যান্স অতীতেও আশার আলো দেখিয়েছে।ইতিহাস কী বলে পাল্লেকেলে নিয়ে?বাংলাদেশ এই মাঠে ওয়ানডেতে জয়ের স্বাদ পেয়েছে আগে—২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার ৩০২ রান তাড়া করে ডি/এল পদ্ধতিতে ৩ উইকেটের জয়। এখন পর্যন্ত পাল্লেকেলের হিসাব বলছে, দুই দলই একবার করে জয় পেয়েছে, সিরিজও সমতায়। আজ যে জিতবে, ইতিহাসের পাল্লাটাও তার দিকে ঝুঁকে যাবে।আবহাওয়ার দুশ্চিন্তা, আবারও বাধা হতে পারে বৃষ্টিআজকের ম্যাচ ঘিরে বড় শঙ্কা—বৃষ্টি। ক্যান্ডিতে গতকাল দুপুরেও হালকা বৃষ্টিতে ভিজে গেছে শহরটা। বিপদের জায়গা হলো—গত বছর এই মাঠেই বৃষ্টির কারণে নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল।সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই আজ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দলকে প্রস্তুত থাকতে হবে একটি অসম্পূর্ণ ম্যাচের সম্ভাবনার জন্যও।শেষ কথা: প্রতীক্ষার অবসান আজবাংলাদেশ ক্রিকেটভক্তরা সিরিজ জয়ের আশায় আজ তাকিয়ে আছে ক্যান্ডির আকাশের দিকে, মাঠের বাইশ গজের দিকে। দুই দলের জন্যই আজকের দিন একটি পরীক্ষা, একটি সুযোগ এবং একটি গর্বের লড়াই। কে জিতবে এই পাহাড়ি লড়াই? মাঠে নামলেই জানা যাবে।
মন্তব্য (০)