বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে নতুন রূপে ফিরেছেন লিটন দাস। অনেক আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল, নাজমুল হোসেন শান্ত টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন না। তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়। অবশেষে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজকে সামনে রেখে লিটন দাসকে অধিনায়ক ঘোষণা করেছে বিসিবি।তবে সবচেয়ে চমক এসেছে সহঅধিনায়ক হিসেবে শেখ মেহেদী হাসানের নাম ঘোষণায়। সংবাদ সম্মেলন কক্ষে থাকা অনেক সাংবাদিকই ছিলেন বিস্মিত। কারণ শেখ মেহেদীর এমন কোনো নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা ঘরোয়া ক্রিকেটেও স্মরণ করতে পারেননি কেউ।ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, "মেহেদী অভিজ্ঞ এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই তাকে ডেপুটি করা হয়েছে।" কিন্তু ক্রিকেট বিশ্লেষকদের একাংশ এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন।জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন এ প্রসঙ্গে বলেন, "শেখ মেহেদীর নেতৃত্ব আমি কখনও দেখিনি। সে কেমন নেতৃত্ব দেবে, জানি না। লিটনকে অধিনায়ক করা ভালো সিদ্ধান্ত। তবে সহঅধিনায়ক হিসেবে একজন তরুণ খেলোয়াড়কে প্রস্তুত করার সুযোগ ছিল। তাওহীদ হৃদয় সেই জায়গায় যোগ্য বিকল্প।"তবে এখানেই শেষ নয়। সাবেক উইকেটকিপার অধিনায়
ক খালেদ মাসুদ পাইলটও হৃদয়কে সহঅধিনায়ক হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। তাঁর ভাষায়, "হৃদয়কে সহকারী হিসেবে নিলে ভালো হতো। ও তো সব ম্যাচেই খেলবে। মেহেদী হয়তো সব উইকেট বা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সুযোগ পাবে না।"হৃদয়কে সহঅধিনায়ক না করার পেছনে যে তার সাম্প্রতিক বিতর্কিত আচরণই প্রধান কারণ, সেটা ক্রিকেট বোর্ড ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলোও ইঙ্গিত দিচ্ছে।সম্প্রতি শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের হয়ে খেলতে গিয়ে বারবার আচরণবিধি ভেঙেছেন তাওহীদ হৃদয়। এক ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে খারাপ আচরণ, এরপর সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে মন্তব্যের হুমকি, এমনকি ম্যাচ রেফারির সঙ্গেও অশোভন আচরণ—সব মিলিয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান তিনি।পরবর্তীতে একটি ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও, আবারও মাঠে নেমে আচরণবিধি ভঙ্গ করেন। আউট হয়েও ক্রিজ ছাড়তে না চাওয়ায় সাতটি ডি-মেরিট পয়েন্ট পান, যার ফলে আরও চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তাকে। এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও, হৃদয়ের ভাবমূর্তিতে এর প্রভাব পড়ে। ফলে বোর্ড হয়তো এমন একজন খেলোয়াড়কে নেতৃত্বের ভূমিকায় আনতে চায়নি, যার চারপাশে নেতৃত্বের চেয়ে বিতর্কই বেশি আলোচনায় আসে। এমন প্রেক্ষাপটে সহঅধিনায়ক থেকে হৃদয়কে আড়াল করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি—এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য (০)