হোয়াটসঅ্যাপ এখন শুধু মেসেজিং অ্যাপ নয়, বরং দৈনন্দিন যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সহজে বার্তা, ছবি, ভিডিও পাঠানো থেকে শুরু করে ভয়েস ও ভিডিও কল করার সুবিধা থাকায় কোটি কোটি মানুষ এটি ব্যবহার করছেন। কিন্তু এই জনপ্রিয়তা এখন হ্যাকারদের নজর কাড়ছে।ছবির ভেতরে লুকানো ভাইরাস!সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হ্যাকাররা এখন আর শুধু ভুয়া লিংক বা অপরিচিত নম্বর থেকে কল দিয়ে প্রতারণা করছে না, বরং ছবির মধ্যেই ম্যালওয়্যার লুকিয়ে পাঠাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা যেই না সেই ছবি ডাউনলোড করেন, অজান্তেই ফোনে প্রবেশ করে ভয়ংকর ভাইরাস, যা চুরি করে নিচ্ছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ওটিপি ও পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য।কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে হ্যাকাররা?বিশেষজ্ঞদের মতে, হ্যাকাররা ব্যবহার করছে 'স্টেগানোগ্রাফি' নামের একটি জটিল কৌশল। এটি এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে ছবির দৃশ্যমান কোন পরিবর্তন ছাড়াই তার ভেতরে গোপনে কোড ঢুকিয়ে দেওয়া যায়। সাধারণ JPEG, PNG, MP3, MP4 ফরম্যাটের ফাইলেই এই ম্যালওয়্যার লুকিয়ে পাঠানো হয়। ব্যবহারকারী যখন সেই ফাইলটি ডাউনলোড করেন, তখনই ম্যালওয়্যারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোনে ইনস্টল হয়ে যায়।সাধারণ অ্যান্টিভাইরাস ধরতে পারে নাএই ধরনের স্টেগানোগ্রাফিভিত্তিক ম্যালওয়্যার সাধা
রণ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার দিয়ে শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। কারণ, অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার সাধারণত পরিচিত ভাইরাস বা অস্বাভাবিক আচরণ শনাক্ত করতে পারে, কিন্তু ছবির ভেতরের লুকানো কোড আলাদা করে ধরতে পারে না। এজন্য দরকার উন্নত পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি ও সাইবার ফরেনসিক বিশ্লেষণ।কীভাবে রক্ষা পাওয়া সম্ভব?সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের হামলা থেকে বাঁচতে ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন: হোয়াটসঅ্যাপের মিডিয়া অটো ডাউনলোড বন্ধ করুন। অপরিচিত ব্যক্তি বা নম্বর থেকে আসা ছবি বা ভিডিও ডাউনলোড করবেন না। ওটিপি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি হোয়াটসঅ্যাপে কখনোই শেয়ার করবেন না। বিশ্বস্ত ও আপডেটেড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন, যদিও এটি শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারে না। সন্দেহজনক কোন মেসেজ বা ছবি পেলেই সতর্ক থাকুন এবং প্রয়োজনে ফোন স্ক্যান করুন। শেষ কথা প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি অসতর্কতায় এটি ভয়ংকর বিপদও ডেকে আনতে পারে। হোয়াটসঅ্যাপে প্রতিদিন অসংখ্য ছবি পাঠানো হয়, যার মধ্যে একটি ছবি হতে পারে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরির মাধ্যম। তাই সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন এবং নিজের সাইবার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেই নিন।
মন্তব্য (০)