যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) অবশেষে স্পেসএক্সকে তাদের স্টারশিপ রকেটের নতুন পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে, যদিও বছরের শুরুতে পরপর দুটি ব্যর্থ উড্ডয়নের ফলে ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক অঞ্চলের দ্বীপগুলোতে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়েছিল।এফএএর সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, স্পেসএক্স এখন ‘ফ্লাইট ৯’ নামে পরিচিত পরবর্তী মিশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবে, যদিও সর্বশেষ ব্যর্থ মিশনের তদন্ত এখনও চলমান।নতুন লাইসেন্সে বড় জয় স্পেসএক্সেরএফএএ ১৫ মে স্টারশিপ ফ্লাইট ৯ এর জন্য আনুষ্ঠানিক উড্ডয়ন লাইসেন্স অনুমোদন করে। এই লাইসেন্সের মাধ্যমে স্পেসএক্স এখন টেক্সাসের বোকা চিকা ঘাঁটি থেকে প্রতি বছর ২৫ বার পর্যন্ত উড্ডয়ন চালাতে পারবে, যা আগে ছিল মাত্র ৫টি।রকেট বিস্ফোরণের ঝুঁকি কমাতে বাড়ানো হয়েছে ‘হ্যাজার্ড জোন’স্পেসএক্সের ফ্লাইট ৭ (জানুয়ারি) ও ফ্লাইট ৮ (মার্চ) মিশনের ব্যর্থতার ফলে এফএএ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, নতুন ফ্লাইটে ১,৬০০ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১,৮৪১ মাইল) পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হবে, যা আগের ৮৮৫ নটিক্যাল মাইল থেকে অনেক বেশি।এই কারণে প্রায় ১৭৫টি ফ্লাইট প্রভাবিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার গড় বিলম্ব সময় ৪০ মিনিট। এফএএর হিসাবে, প্রতিটি বিলম্বিত ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহনকারী এয়ারলাইনের ক্ষতি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে।পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তির পরীক্ষার উদ্যোগ‘ফ্লাইট ৯’-এ স্পেসএক্স প্রথমবারের মতো সুপার হেভি বুস্টার পুনঃব্যবহার করার চেষ্টা করবে। ৭১ মিটার লম্বা এই বুস্টারে রয়ে

ছে ৩৩টি রকেট ইঞ্জিন, যা মূল উৎক্ষেপণের সময় বিশাল thrust বা গতি তৈরি করে।স্পেসএক্স ইতিমধ্যেই তিনটি সুপার হেভি বুস্টার সফলভাবে উদ্ধার করেছে, এবং ভবিষ্যতে এই অংশগুলো পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে খরচ কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে।ধ্বংসাবশেষ ও নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগফ্লাইট ৭-এ তুর্কস অ্যান্ড কেইকোস দ্বীপপুঞ্জে রকেটের ধ্বংসাবশেষ পড়েছিল, এমনকি একটি গাড়িতে আঘাতের ঘটনাও ঘটেছিল। ফ্লাইট ৮-এর ধ্বংসাবশেষ আবার বাহামা দ্বীপের কাছাকাছি অঞ্চলে পাওয়া গেছে।এফএএ জানিয়েছে যে, তারা যুক্তরাজ্য, তুর্কস অ্যান্ড কেইকোস, বাহামা, মেক্সিকো ও কিউবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে যেন ভবিষ্যতের মিশনগুলো জননিরাপত্তা রক্ষা করে পরিচালিত হয়।নাসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে স্টারশিপনাসা ইতিমধ্যে স্পেসএক্সকে ৪ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ দিচ্ছে চন্দ্রাভিযানের জন্য। যদি ভবিষ্যতে নাসা তাদের বর্তমান ব্যয়বহুল স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (SLS) পরিত্যাগ করে, তাহলে স্টারশিপই হতে পারে চাঁদ বা মঙ্গলে যাওয়ার একমাত্র কার্যকর বিকল্প।হোয়াইট হাউসের সাম্প্রতিক বাজেট প্রস্তাবে SLS সিস্টেম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।দ্রুত উন্নয়নমূলক পরীক্ষানীতিতে অবিচল স্পেসএক্সস্পেসএক্স একটি ‘র‍্যাপিড ইটারেটিভ ডেভেলপমেন্ট’ পদ্ধতি অনুসরণ করে, যেখানে ব্যর্থতা থেকেও শিক্ষা নেওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তারা অনেক সস্তা প্রোটোটাইপ তৈরি করে নিয়মিত পরীক্ষা চালায়, যা প্রচলিত দীর্ঘমেয়াদি পরীক্ষার চেয়ে দ্রুত ফল দেয় বলে দাবি করছে।ইলন মাস্ক বারবার বলেছেন, প্রতিটি ব্যর্থতাই হচ্ছে ভবিষ্যতের সাফল্যের সোপান।