“আমি এখন ওকে বারবার বলি ‘মাম্মি’ বলো, ‘মাম্মি’। ও চেষ্টা করে। কখনো পারে, কখনো পারে না। কিন্তু যখন পারে, আমার মনটা আনন্দে ভরে ওঠে! যতবার শুনি, তৃপ্তি পাই না”—এমন আনন্দে কাঁপছিলেন মা নিশামনি।ছেলে বাসিত খান মুসা—যে ছিল জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হওয়া সবচেয়ে ছোট শিশু—তার মুখে মা শব্দটি শুনতে নয় মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটেছে গত ১ মে, সকাল ৮টায়, ফিজিওথেরাপির সময়। ঠিক তখনই ‘মাম্মি’ বলে ডেকে ওঠে সাত বছর বয়সী মুসা।মুসার মা নিশামনি ও বাবা মুস্তাফিজুর রহমানের একমাত্র সন্তান সে। গত বছর ১৯ জুলাই, রাজধানীর রামপুরার মেরাদিয়া হাট এলাকায় আইসক্রিম কিনে দিতে নিচে নামলে, মুসা ও তার দাদি মায়া ইসলাম (৬০) অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হন। দাদি মায়া ইসলাম পরদিনই মারা যান। আর গুরুতর আহত মুস
ার জন্য শুরু হয় জীবন-মৃত্যুর লড়াই।প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিল মুসা। তার চিকিৎসার সংকট নিয়ে সংবাদমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলে, অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগ নিয়ে ২২ অক্টোবর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠায় সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে।সেখানে ৫ মাস ১২ দিন চিকিৎসা শেষে মুসা ও তার পরিবার দেশে ফেরে গত ৩ এপ্রিল। সেদিনই বিমানবন্দর থেকে সরাসরি মুসাকে ভর্তি করা হয় সিএমএইচে, যেখানে এখনো সে চিকিৎসাধীন।ছোট্ট মুসার এই ফিরে আসা অলৌকিক ছাড়া আর কিছু নয়। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে যেখানে বেঁচে থাকাটাই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ, সেখানে ‘মা’ বলে ডাকার ক্ষমতা ফিরে পাওয়া যেন একটি জীবন্ত বিস্ময়।এই মা দিবসে, নিশামনির কাছে সবচেয়ে বড় উপহার—সন্তানের মুখে একটি ছোট্ট শব্দ, “মা”।
মন্তব্য (০)