আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে একটি নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার, যার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, তাদের সহযোগী সংগঠন কিংবা সমর্থক গোষ্ঠীগুলোকেও শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হবে।গতকাল শনিবার সরকার গেজেট আকারে সংশোধিত আইনটি প্রকাশ করেছে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনি কাঠামোতে একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা করল।আজ রোববার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর (প্রশাসন) গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানান, সংশোধিত আইনে ট্রাইব্যুনালকে সংগঠনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা প্রসিকিউশনের মতে একটি “যথোপযুক্ত ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত”।তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত আইনেও সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার কিংবা শাস্তির বিধান রয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মতো আন্তর্জাতিক মানের একটি ফোরামে সংগঠন বা ব্যক্তির বিচার হলে জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি হবে।গতকাল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এই সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হ
য়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাদের বিচার চলাকালীন সময়ে দলের সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ থাকবে, বিশেষ করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় সাইবার স্পেসসহ সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে।এছাড়াও, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। জুলাই ঘোষণাপত্রও ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।নতুন অধ্যাদেশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যদি ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হয় যে কোনো সংগঠন আন্তর্জাতিক অপরাধের সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত, অর্থাৎ অপরাধ সংঘটন, আদেশ প্রদান, সহযোগিতা, উসকানি বা ষড়যন্ত্র করেছে, তবে সংগঠনটির কার্যক্রম স্থগিত, নিষিদ্ধ, নিবন্ধন বাতিল, লাইসেন্স বাতিল কিংবা সম্পত্তি জব্দ করার অধিকার ট্রাইব্যুনালের থাকবে।সংশোধিত আইনে “সংগঠন” শব্দের পরিসরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই সংজ্ঞার আওতায় যেকোনো রাজনৈতিক দল, তার অধীনস্থ বা সংশ্লিষ্ট সংগঠন কিংবা গোষ্ঠীও অন্তর্ভুক্ত হবে।
মন্তব্য (০)