মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় কিশোর-তরুণদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে রাহুল আহমেদ খান (১৮) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুই তরুণ আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার খাসের চর এলাকায়।নিহতের পরিচয় ও পটভূমিনিহত রাহুল উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম খানের ছেলে। তিনি মেদুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় দুই বছর আগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা দেননি। আহতরা হলেন রাসেল ও আসিফ, যাঁরা একই এলাকার বাসিন্দা।ঘটনার বিবরণস্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই দল কিশোর-তরুণদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। প্রায় ১০ দিন আগে তুচ্ছ ঘটনার জেরে রাহুল ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে মেদুলিয়াসহ আশপাশের গ্রামের কয়েকজন কিশোর-তরুণের বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে খাসের চর গ্রামে ২০ থেকে ২৫ জন কিশোর-তরুণ দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে রাহুলের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন রাহুল। তাঁর সঙ্গী রাসেল ও আসিফও এ হামলায় আহত হন।স্থানীয়রা রাহুলকে উদ্ধার করে সিঙ্গাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়

ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।আইনি পদক্ষেপ ও তদন্তখবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নিহত রাহুলের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। আজ মঙ্গলবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।রাহুলের বাবা নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় নয়াপাড়া গ্রামের তরিকুল ইসলাম (১৮), কামুড়া গ্রামের নাজমুল হোসেন (১৯) ও তানভীর হোসেন (১৮) এবং খাসের চর গ্রামের রাজীব হোসেন (১৯) সহ আরও কয়েকজন কিশোর-তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম বলেন, এলাকায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে রাহুলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। তাঁর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।এই ঘটনা স্থানীয় কিশোর-তরুণদের মধ্যে চলমান আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের ভয়াবহ পরিণতি তুলে ধরেছে। এলাকায় শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষের সচেতনতা ও উদ্যোগ প্রয়োজন।