চট্টগ্রামে আলোচিত ঢাকাইয়া আকবর হত্যা মামলায় ধরা পড়েছে বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ দুই আত্মীয়—তার ভাই ও ভাগনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই দফা অভিযানে তারা গ্রেপ্তার হয় সোমবার রাতে।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ওসমান আলী ও মো.
আলভিন। ওসমান আলীকে গ্রেপ্তার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ, আর র্যাব-৭ এর বিশেষ অভিযানে ধরা পড়ে সাজ্জাদের ভাগনে আলভিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পতেঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম এবং র্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফফর হোসেন।সমুদ্রসৈকতে গুলিতে খুন হন ঢাকাইয়া আকবরগত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার সময় ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রোববার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।পরদিন আকবরের স্ত্রী রূপালী বেগম বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন, যেখানে মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে ওসমান আলী ও আলভিনের নামও অন্তর্ভুক্ত।সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সাজ্জাদ আলী২০০০ সালের বহদ্দারহাটের ভয়াবহ ব্রাশফায়ারে আটজন নিহত হন, যার মধ্যে ছিলেন ছয় ছাত্রলীগ কর্মী। এই ঘটনায় সাজ্জাদ আলী দণ্ডিত হলেও পরবর্তীতে উচ্চ আদালত থেকে খালাস পান। এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান, কিন্তু থেমে থাকেনি তাঁর অপরাধ সাম্রাজ্য।বিদেশে থেকেও সাজ্জাদ নগরের বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও হাটহাজারী এলাকায় তার বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে লিপ্ত ছিল। বর্তমানে তার বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছে ছোট সাজ্জাদ ওরফে সাজ্জাদ হোসেন।অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই একের পর এক খুনসাজ্জাদের সাবেক সহযোগী হিসেবে পরিচিত সরোয়ার হোসেন ও ঢাকাইয়া আকবর এখন তার প্রতিপক্ষ। একসময় তারা বড় সাজ্জাদের হয়ে কাজ করলেও গত দুই বছর আগে আলাদা হয়ে যান। তাদের দলত্যাগ এবং ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় ২৯ মার্চ।ওই ঘটনার মাত্র কদিনের মাথায় আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ঢাকাইয়া আকবর। এতে শহরে শঙ্কার ছায়া আরও ঘন হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটাচ্ছে। ঢাকাইয়া আকবর হত্যার জেরে বড় সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠদের গ্রেপ্তার, এবং অতীতে তার অপরাধ ইতিহাস সামনে আসায় নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে গেলেও শহরের অপরাধ জগত রয়ে গেছে উত্তপ্ত।
মন্তব্য (০)