ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

অন্যান্য -

রাজধানীর অপরাধজগৎ: আধিপত্যের দ্বন্দ্বে তৎপর শীর্ষ সন্ত্রাসীরা

রাজধানীর অপরাধজগৎ: আধিপত্যের দ্বন্দ্বে তৎপর শীর্ষ সন্ত্রাসীরা Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

রাজধানী ঢাকায় আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সংঘটিত হচ্ছে হত্যা ও হামলার মতো ভয়ংকর অপরাধ। রাজনীতি, অপরাধ ও ক্ষমতার অশুভ আঁতাত জনমনে তৈরি করছে চরম আতঙ্ক। সাম্প্রতিক খুনোখুনির পেছনে কারা?গত দুই মাসে রাজধানীতে তিনটি আলোচিত খুনের ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগীদের নাম এসেছে।১৯ এপ্রিল: হাতিরঝিলে যুবদল নেতা আরিফ শিকদারকে গুলি ও ছুরিকাঘাতে হত্যা।১৩ মার্চ: মগবাজারে বিএনপির রাজনকে কুপিয়ে জখমের চেষ্টা।শেষ কেস - ২৬ মে: বাড্ডার গুদারাঘাটে বিএনপি নেতা কামরুল আহসান সাধনকে গুলি করে হত্যা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতে, এই ঘটনাগুলোর মূল কারণ— কেব্‌ল ও ব্রডব্যান্ড ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার। চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসীরাসুব্রত বাইন – আধিপত্যের লড়াইয়ে সবচেয়ে সক্রিয়। বহু হত্যাকাণ্ডে জড়িত।মোল্লা মাসুদ – সুব্রতের ঘনিষ্ঠ, অস্ত্র ও হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী।বিপু (শুটার মাহফুজুর রহমান) – সুব্রতের অন্যতম আস্থাভাজন সহযোগী, আরিফ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার।বিকাশ কুমার বিশ্বাস – বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রণ করছেন ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা।জিসান আহমেদ – দুবাইয়ে পলাতক, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে প্রভাবশালী চক্র। অপরাধচক্রের নতুন রূপরেখা গুলশান-বাড্ডা এলাকায় সক্রিয় নতুন চার সন্ত্রাসী গ্রুপ—নেতৃত্বে রয়েছেন সুব্রত বাইন, মেহেদী, রবিন ও হেলাল উদ্দিন। এদের কেউ কেউ বিদেশে থেকে অপরাধ সংগঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন—রবিন বর্তমানে মালয়েশিয়ায়, মেহেদী যুক্তরাষ্ট্রে। সহযোগীরা ভাড়া খেটে ময়লা ব্যবসা, কেব্‌ল সংযো

গ, চাঁদাবাজি, সম্পদ দখলের মতো কর্মকাণ্ডে যুক্ত। আধিপত্যের নামে গোলাগুলিমগবাজার, হাতিরঝিল, বাড্ডা, গুলশান ও মতিঝিলে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক দফা গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, একটি দল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে অস্ত্র আমদানির চেষ্টাও করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন—“এলাকাভিত্তিক নজরদারি, সাঁড়াশি অভিযান এবং সন্ত্রাসীদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে।”তবে গোয়েন্দারা মনে করছেন, বিদেশে থাকা অপরাধীদের দেশীয় সহযোগীদের কার্যকলাপ ঠেকাতে আরও কড়া নজরদারি দরকার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাব২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়লে, সেই শূন্যতা কাজে লাগিয়ে অনেক দীর্ঘদিনের বন্দি সন্ত্রাসী জামিনে মুক্ত হয়ে আবার তৎপর হয়ে ওঠেন।এদের মধ্যে:কিলার আব্বাস (মিরপুর)সুইডেন আসলাম (তেজগাঁও)পিচ্চি হেলাল (মোহাম্মদপুর)ইমন (হাজারীবাগ)টিটন ও রাসু (ঢাকা সিটি অঞ্চল) ভবিষ্যতের আশঙ্কাঅপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজধানীর কেব্‌ল, ব্রডব্যান্ড, টেন্ডার ও ময়লা বাণিজ্য-কেন্দ্রিক এই অপরাধচক্র ধীরে ধীরে আরও সংঘবদ্ধ হচ্ছে।সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও কঠোর নজরদারি ছাড়া এদের রুখে দেওয়া কঠিন। সাবেক ডিএমপি কমিশনার নাইম আহমেদ বলেন,“এই মামলাগুলোর দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে। যারা সন্ত্রাসীদের হয়ে কাজ করছে, তাদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন। রাজধানীতে চলমান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে—কারণ আজ যারা ভাড়াটে খুনি, কাল তারাই হতে পারে আমাদের আশেপাশের হুমকি।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর