রাশিয়া আগামী চার বছরের মধ্যে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর সরাসরি হামলা চালাতে পারে—এমন গুরুতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জার্মানির প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেনারেল কার্সটেন ব্রয়েয়ার। তাঁর মতে, এমন ঝুঁকি মোকাবিলায় এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে।বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল কার্সটেন জানান, রাশিয়া প্রতিবছর শত শত যুদ্ধট্যাংক তৈরি করছে, যেগুলোর একটি বড় অংশ ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত না হয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে ভবিষ্যতের সামরিক আগ্রাসনের জন্য।তিনি বলেন, "২০২৯ সালের মধ্যেই কিংবা তারও আগে বাল্টিক অঞ্চলের ন্যাটো দেশগুলোর ওপর এই ট্যাংক ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া।" তাঁর মতে, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়া ইউক্রেন ইস্যুতে ভিন্নমত পোষণ করলেও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এখনো ঐক্য বজায় রয়েছে।সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত সাংগ্রি-লা সংলাপের ফাঁকে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেন জেনারেল কার্সটেন। এ সংলাপটি আয়োজন করেছিল আন্তর্জাতিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ।আসন্ন ন্যাটো সম্মেলনকে সামনে রেখে

ই জার্মান প্রতিরক্ষাপ্রধান এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এই সম্মেলনটি নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যেখানে জোটের বাজেট ও কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।জেনারেল কার্সটেন বলেন, "ন্যাটো এখন রাশিয়ার দিক থেকে এক গভীর ও অভূতপূর্ব হুমকির মুখোমুখি। আমার ৪০ বছরের পেশাগত জীবনে এমন ঝুঁকি আগে কখনো দেখিনি।"তিনি আরও জানান, রাশিয়া বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় ১,৫০০ যুদ্ধট্যাংক তৈরি করছে, যার সব কটি ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে না। বরং সেগুলোর অনেকগুলো নতুন সামরিক কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।এছাড়াও তিনি এক চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরে বলেন, "২০২৪ সালেই রাশিয়া ১৫২ মিলিমিটারের প্রায় ৪০ লাখ আর্টিলারি শেল তৈরি করেছে, যেগুলোর একটা বড় অংশ এখনো ইউক্রেনে ব্যবহৃত হয়নি। এই তথ্যগুলো জার্মানি ও তার পশ্চিমা মিত্রদের গোয়েন্দা বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া গেছে।" জার্মান সেনাপ্রধানের এই সতর্কবার্তা ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে, যা ভবিষ্যতের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য এখনই কার্যকর প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।