ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

মধ্যপ্রাচ্য

আবারও নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপের ভূমিকার অবসান—ইরানের হুঁশিয়ারি

আবারও নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপের ভূমিকার অবসান—ইরানের হুঁশিয়ারি Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :
৩০

ইরানকে ঘিরে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক উত্তেজনা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সম্প্রতি তেহরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় ইরান কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে—এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে ইউরোপের ভূমিকা চিরতরে শেষ হয়ে যাবে।শনিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য নয়), ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক কূটনৈতিক সভায় বলেন, "যদি তেহরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আবার চাপানো হয়, তাহলে ইউরোপের জন্য পারমাণবিক আলোচনায় আর কোনো অবস্থান থাকবে না।"পুরনো চুক্তি, নতুন সংকট২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ‘যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ (JCPOA) নামের ঐতিহাসিক চুক্তিতে ইরান এবং ছয়টি বিশ্বশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অংশ নেয়। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩.

৭% মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার পায়, যার মাধ্যমে কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। বিনিময়ে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করা হয়।কিন্তু ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর ইরানও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চুক্তির কিছু শর্ত থেকে সরে আসে।চুক্তির ৩৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, যদি কোনো পক্ষ চুক্তিভঙ্গ করে, তাহলে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হতে পারে। এই ধারা ঘিরেই বর্তমানে উত্তেজনা চরমে।কূটনৈতিক প্রস্তুতি ও আলোচনাআব্বাস আরাগচি জানান, তেহরান এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরুর সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, “আমরা এখন আলোচনা শুরুর সময়, কাঠামো, বিষয়বস্তু এবং ইরানের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় নিশ্চয়তা নিয়ে পর্যালোচনা করছি।”তবে ইরান সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছে, আলোচনার বিষয় শুধুমাত্র পারমাণবিক কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে। সামরিক শক্তি বা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আলোচনার বিষয় নয়।ইসরায়েলি হামলা ও উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যগত জুন মাসে, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি এবং আবাসিক এলাকায় হামলা চালায়। এতে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ইসরায়েল দাবি করে, তারা ইরানের হুমকি মোকাবেলায় আত্মরক্ষার্থে এ হামলা চালিয়েছে। তবে ইরান একে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করে।পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি—কাতারের ‘আল-উদেইদ’ ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফর্দো, নাতানজ এবং ইসফাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে বাংকার-ধ্বংসী বোমা নিক্ষেপ করে।এই সংঘাত টানা ১২ দিন ধরে চলার পর যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন।পারমাণবিক সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের পথে?এই সংঘাতের পর ইরান আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)–এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা দেয়।পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি বলেন, "আমাদের আইএইএর প্রতি আস্থা নেই, তাই এই সহযোগিতার কাঠামো নতুন করে নির্ধারণ করা হবে।" সম্প্রতি ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট **মাসুদ পেজেশকিয়ান একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে—IAEA ভবিষ্যতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় পরিদর্শনে যেতে চাইলে তা আগে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল কাউন্সিল–এর অনুমোদন সাপেক্ষে করতে হবে।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর