ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

ইউরোপ

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির মুখে কি ইউরোপ আত্মসমর্পণ করছে?

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির মুখে কি ইউরোপ আত্মসমর্পণ করছে? Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :
৩৪

মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কূটনৈতিক দৃঢ়তাকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। প্রথমে কঠোর অবস্থান নিলেও শেষ পর্যন্ত ইউরোপ নিজেদের অবস্থানে নমনীয়তা দেখাচ্ছে—এই ইঙ্গিত মিলছে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র থেকে।শক্ত অবস্থান থেকে নরম চুক্তির পথেমাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেও ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় কঠোর মনোভাব দেখিয়েছিল। যুক্তরাজ্যের মতো হালকা চুক্তিকে তাঁরা খারিজ করে দিয়েছিলেন। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা তখন বলেছিলেন, “গাড়ি, গরুর মাংস, বিমানের যন্ত্রাংশ ও ইথানলের মতো পণ্য নিয়ে এতটা হালকা চুক্তিতে আমরা রাজি নই।”কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি হালকা চুক্তির দিকেই এখন এগোচ্ছে ইউরোপ। তারা চাইছে—গাড়ি রপ্তানিতে ২৭.

৫% শুল্ক ও ইস্পাত আমদানিতে ৫০% শুল্ক থেকে কিছুটা ছাড় পেতে। এর বদলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ১০% শুল্ক আরোপে রাজি হয়েছে ইউরোপ।এই প্রস্তাব ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের টেবিলে পৌঁছে গেছে, এবং ইউরোপ তাঁর প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।রাশিয়া ইস্যুই কি ইউরোপকে নতি স্বীকারে বাধ্য করল?ইইউর অবস্থান পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম বড় কারণ রাশিয়ার সামরিক হুমকি। গত জুনে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে এই বাস্তবতা আরও স্পষ্ট হয় যে, ইউরোপের নিজস্ব প্রতিরক্ষা সক্ষমতা গড়ে তুলতে আরও ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগবে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইউক্রেন কিংবা ইউরোপ নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে না।একজন কূটনীতিকের ভাষায়, “আমরা যেটা চেয়েছি, সেটা পেয়েছি। এখন আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বোঝাপড়া করতেই হবে।”ইউরোপ কি যুক্তরাষ্ট্রের ছায়াতেই চলবে?ইউরোপের অভ্যন্তরে এই ইস্যুতে মতভেদ রয়েছে। ফ্রান্সসহ কিছু দেশ আবারও কঠোর অবস্থানে ফেরার পক্ষে। তারা চাইছে, ট্রাম্পের হুমকি উপেক্ষা করে আবারও গুগল, মাইক্রোসফট, এক্স (সাবেক টুইটার), গাড়ি এবং মদের ওপর শুল্ক চাপানো হোক।তবে আরেক কূটনীতিক বলেন, “এই চুক্তিগুলো শুধু বাণিজ্যের বিষয় না, বরং নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও ইউক্রেন ইস্যুর সঙ্গে জড়িত। স্বল্পমেয়াদি আর দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের মধ্যে একটা ভারসাম্য আমাদের খুঁজতে হচ্ছে।”সামনে কি অপেক্ষা করছে?আজ সোমবার ব্রাসেলসে ইইউর বাণিজ্যমন্ত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠকের পরই শেষ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইইউর প্রতিশোধমূলক শুল্ক বসানোর স্থগিতাদেশ। বৈঠকে ফ্রান্সসহ বেশ কিছু দেশ আবারও আগের মতো কঠোর অবস্থানে ফেরার দাবি তুলতে পারে।বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প যদি ৩০ শতাংশ শুল্ক বাস্তবায়ন করেন, তাহলে তা ইউরোপের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা হবে। এমনকি ১৫ শতাংশ শুল্কের বোঝাও ইইউর অর্থনীতির জন্য সহ্য করার মতো নয়।উপসংহার ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি শুধু একটি বাণিজ্য আলোচনা নয়, বরং তা ইউরোপের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক অবস্থানের ভবিষ্যতের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন দেখার বিষয়, ইউরোপ শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করেই ট্রাম্পের রোষ থেকে বাঁচতে চায়, নাকি প্রতিরোধ গড়ে তোলে নিজের অবস্থান ধরে রাখে।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর