ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় ত্রাণ নিতে এসে নিহত ৯৩ ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি হামলার নিন্দায় পোপের ক্ষোভ

গাজায় ত্রাণ নিতে এসে নিহত ৯৩ ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি হামলার নিন্দায় পোপের ক্ষোভ Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :
৫০

গাজার যুদ্ধকবলিত পরিস্থিতিতে আবারও ত্রাণপ্রত্যাশী মানুষের ওপর বর্বর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার গাজায় মানবিক সহায়তা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের ওপর গুলি চালিয়ে ৯৩ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।সংস্থাটি জানায়, গাজার উত্তরের একটি এলাকায় ত্রাণবাহী ট্রাক পৌঁছানোর পর মুহূর্তেই সেখানে গুলি চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অন্তত ৮০ জন। একই দিন গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফা এলাকায় একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে আরও ৯ জন নিহত হন। এছাড়া খান ইউনিসের আরেক স্থানে ত্রাণ নিতে আসা ৪ জন ফিলিস্তিনিও গুলিতে প্রাণ হারান।জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানায়, তাদের ২৫টি খাদ্যবাহী ট্রাক গাজা সিটির উপকণ্ঠে পৌঁছানোর পর হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড় জমে। এই ভিড় লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায় বলে দাবি করা হয়।তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা কেবল ‘তাৎক্ষণিক হুমকি প্রতিহত করতে’ সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে। তারা নিহতের সংখ্যা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে।পোপ লিও চতুর্দশের তীব্র প্রতিবাদ ও শান্তির আহ্বানএই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ লিও চতুর্দশ গাজায় চলমান সহিংসতা এবং বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি রোববার প্রার্থনা শেষে বলেন, “গাজায় যা ঘটছে, তা কেবল যুদ্ধ নয়, বরং মানবতার বিরুদ্ধে সরাসরি বর্বরতা।”পোপ বলেন, “ইসরায়েলি হামলাগুলো প্রার্থনাস্থল ও নিরীহ বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সাম

রিক হামলার অংশ।” তিনি অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান।এর আগে গাজা সিটির হলি ফ্যামিলি গির্জায় ইসরায়েলি হামলায় তিনজন আশ্রয়প্রার্থী নিহত হন। ঘটনার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পোপের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন, দাবি করেন, ‘ভুলবশত ছোড়া গোলাবারুদের আঘাতে’ এই প্রাণহানি ঘটে।বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ঘটনার দিন গির্জাটিতে পোপ ফ্রান্সিসের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল, এবং সেই গির্জার সঙ্গে সংযুক্ত রোমান ক্যাথলিক নেতা গ্যাব্রিয়েল রোমানেল্লি নিশ্চিত করেন, হামলায় অনেকে নিহত ও আহত হয়েছেন।নৃশংসতার ক্রমবর্ধমান চিত্রগাজায় ত্রাণ নিতে এসে বেসামরিক মানুষের প্রাণ হারানো এখন যেন প্রতিদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দাবি, খাদ্য, পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের তীব্র সংকটের কারণে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণকেন্দ্রে ছুটছেন। আর সেই সুযোগে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ যাচ্ছে অসংখ্য মানুষের।জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, মে মাসের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জন ফিলিস্তিনি ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।যুদ্ধের পটভূমি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের একটি হামলায় ইসরায়েলে নিহত হন ১,২১৯ জন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর জবাবে ইসরায়েল শুরু করে গাজার ওপর সীমাহীন বিমান ও স্থল অভিযান, যা এখনো চলমান। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৮,৮৯৫ জন ফিলিস্তিনি, যাঁদের অধিকাংশই শিশু, নারী ও নিরীহ বেসামরিক নাগরিক।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর