ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় দুধ ও খাদ্য প্রবেশে বাধা, মৃত্যুর মুখে হাজার হাজার শিশু

গাজায় দুধ ও খাদ্য প্রবেশে বাধা, মৃত্যুর মুখে হাজার হাজার শিশু Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

ইসরাইলি অবরোধ আর নিষ্ঠুরতা গাজা উপত্যকায় শিশুদের জন্য রচনা করছে এক ভয়াবহ মৃত্যুর মঞ্চ। যুদ্ধের গোলাগুলিতে নয়, এখানে শিশুরা ধীরে ধীরে মরছে—ক্ষুধায়, অপুষ্টিতে, আর একটিমাত্র দুধের টিনের অভাবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৬৬ জন শিশু পুষ্টিহীনতায় মারা গেছে। পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে এই সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা।খাবার নেই, দুধের টিনও নেই—দায়ী ইসরাইলের অবরোধগত কয়েক মাস ধরে ইসরাইল গাজায় খাদ্য, পানি, শিশুখাদ্য এবং জরুরি ওষুধ প্রবেশে কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এতে করে দুগ্ধদানে অক্ষম মায়েরা সন্তানদের মুখে এক ফোঁটা দুধ পর্যন্ত তুলে দিতে পারছেন না। গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের মুখপাত্র খালিল আল-দাকরান আল জাজিরাকে বলেন, ‘এখানে শিশুদের জন্য এখন দুধের একটিও টিন নেই।’ চিকিৎসকেরা বলছেন, বর্তমানে অন্তত ৬০ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।হাসপাতালগুলো অচল, ব্যথায় কাতর শিশুরা ও ওষুধহীন চিকিৎসাইসরাইলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার হাসপাতাল ব্যবস্থাও। ব্রিটেন থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবী নার্স হ্যানা গ্রেস প্যান জানান, ‘হাসপাতালগুলো সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে। বিস্ফোরণে দগ্ধ, অঙ্গহানি পাওয়া শিশুরা বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কাতরাচ্ছে, কিন্তু ব্যথা কমানোর জন্য পর্যন্ত কোনো ওষুধ নেই।’জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৫,০০০ শিশু গুরুতর অপুষ্টি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬ শিশুর মৃত্যু ইতোমধ্যে নিশ্

চিত করা হয়েছে।জাতিসংঘ ও ডব্লিউএইচওর সতর্ক বার্তাগাজার এই ভয়াবহ মানবিক সংকট নিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সোমবার আহ্বান জানান, ‘ইসরাইল যেন অবিলম্বে সব প্রবেশপথ খুলে দিয়ে খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশের সুযোগ দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গাজার প্রতি পাঁচজন মানুষের মধ্যে একজন এখন চরম ক্ষুধায় ভুগছে।’বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জোর দিয়ে বলেছে, ‘ফিলিস্তিনিদের জীবন রক্ষায় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।’যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও ট্রাম্পের মন্তব্যমঙ্গলবার হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানান, ‘গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলা বন্ধ দেখতে চান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’ তিনি আরও জানান, ‘আগামী সপ্তাহেই গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে।’ একই বক্তব্য দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও।প্রতিদিনের হামলায় রক্তাক্ত গাজা, বাড়ছে হতাহতের সংখ্যাআন্তর্জাতিক সমালোচনার তোয়াক্কা না করেই ইসরাইল গাজায় প্রতিদিন চালিয়ে যাচ্ছে বোমাবর্ষণ। মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইল ১৪০ বার হামলা চালিয়েছে, এতে ১১৬ জন নিহত এবং ৪৬৩ জন আহত হয়েছেন। শুধু মঙ্গলবার সকালেই প্রাণ হারিয়েছেন ৬০ জন। মার্চের শেষ দিকে, ইসরাইল সমর্থিত মার্কিন সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় নিহত হয় ৬০০ জন ফিলিস্তিনি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬,৬৪৭ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১,৩৪,১০৫ জনের বেশি।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর