ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

জেলা

রাজশাহীতে ভিজিডি কার্ড নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের দুর্নীতি, অভিযোগ এনসিপির

রাজশাহীতে ভিজিডি কার্ড নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের দুর্নীতি, অভিযোগ এনসিপির Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে দুস্থ নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিডি কার্ড বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের মধ্যে ভাগাভাগির অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ জানিয়েও সমাধান না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ডের মোট সংখ্যা ৪০০টি, যেখানে আবেদন জমা পড়েছে ১ হাজার ৬৫৭ জনের। অভিযোগ উঠেছে, বিএনপি তাদের লোকজনের জন্য ২২৫টি এবং জামায়াত ৯০টি কার্ড নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এই অনিয়মের প্রতিবাদে রাজশাহী জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীমা সুলতানা সহ কয়েকজন নেতাকর্মী ইউএনও এ কে এম নূর হোসেনের দপ্তরে গিয়েছিলেন।সেখানে থেকে বেরিয়ে শামীমা সুলতানা বলেন, "বিএনপি-জামায়াতের নেতারা নাকি পুরো কার্ড নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?" তিনি আরও বলেন, "জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পরও যদি স্বৈরাচারী মনোভাব থেকে না বের হওয়া যায়, তাহলে দুর্নীতি থামবে না।"এনসিপি নেত্রী শামীমা জানান, তারা রাজনৈতিক কারণে নয়, বরং কার্ড বিক্রির অভিযোগ পেয়ে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের পক্ষে প্রশাসনের সহায়তা চাইতে গিয়েছিলেন।এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান লাঞ্ছনার আশঙ্কায় গতকাল অফিসে যাননি। তিনি বলেন, “প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যরা যাচাই-বাছাই করে তালিকা দেবে, তারপর ইউনিয়ন কমিটি তা উপজেলা কমিটিতে পাঠাবে—এটাই নিয়ম।

কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের নেতারা চাপ দিয়ে তালিকা দিতে বাধ্য করছিলেন।” তিনি দাবি করেন, ইউএনওকে তিনি লটারির মাধ্যমে কার্ড বণ্টনের জন্য বলেছিলেন। কিন্তু ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম ইউএনওর কাছ থেকে ‘সমঝোতা ভিত্তিক তালিকা’ করার অনুমতি এনে দেন।বদিউজ্জামান জানান, তিনি আবারও লটারির দাবিতে ইউএনওর কাছে আবেদন করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত লটারির মাধ্যমেই কার্ড বণ্টন হবে বলে আশা করছেন।খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, এই কার্ড বণ্টন প্রক্রিয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার ও জামায়াত নেতা ফাইসুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এ বিষয়ে আবু বাক্কার গণমাধ্যমকে বলেন, "বিএনপির জন্য ২২৫টি এবং জামায়াত ৯০টি কার্ড নিয়েছে। বাকিগুলো চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও এনসিপিকে দিতে বলেছি।"তবে জামায়াত নেতা ফাইসুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে ইউএনও এ কে এম নূর হোসেন বলেন, “কার্ড ভাগাভাগির বিষয়ে এনসিপি আপত্তি জানিয়েছে। আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি—ইউনিয়ন কমিটি যদি নিজে তালিকা করতে না পারে, তাহলে লটারির মাধ্যমে কার্ড বিতরণ করা হবে।” তিনি আরও বলেন, "ইউনিয়ন কমিটি যদি লিখিতভাবে অনুরোধ জানায়, তাহলে উপজেলা কমিটি লটারি আয়োজন করবে, যাতে সব অনিয়ম বন্ধ হয়।" দুস্থ নারীদের সহায়তার জন্য সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হন। এ ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবার সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন, যাতে প্রকৃত প্রাপকেরাই তাদের প্রাপ্য সহযোগিতা পান।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর