দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন বিশ্বের ধনী উপসাগরীয় তিন দেশে—সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। এই সফর ঘিরে তীব্র কূটনৈতিক আগ্রহ তৈরি হয়েছে, যেখানে প্রতিটি দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ককে নিজেদের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক লাভে পরিণত করতে চায়। সৌদি আরব: মূল লক্ষ্য নিরাপত্তা চুক্তিসৌদি আরব চায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুরক্ষা চুক্তি পাকাপোক্ত করা। বিশ্লেষকদের মতে, "নিরাপত্তা, নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা"ই এখন রিয়াদের প্রধান এজেন্ডা। সৌদি আরব আশা করছে একটি প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য চুক্তির, যা আগেও প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুতির অভাবে থমকে যায়। দেশটি নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি চালু করতে চায়, যার অংশ হিসেবে নিজ দেশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার চায় – যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, সৌদি যদি ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করে, তবে তিনি সফরে যাবেন – সৌদি সরকার এ পর্যন্ত ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশ্ব নেতার লক্ষ্যআবুধাবি নিজেকে বলছে "Capital of Capital" – অর্থাৎ পুঁজির রাজধানী।&n
bsp;দেশটি ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ১০ বছরে ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে, বিশেষ করে AI, সেমিকন্ডাক্টর, জ্বালানি ও উৎপাদন খাতে। তাদের লক্ষ্য ২০৩১ সালের মধ্যে এআই খাতে বিশ্ব নেতৃত্ব অর্জন। কিন্তু এটি সম্ভব হবে না যদি যুক্তরাষ্ট্র মাইক্রোচিপ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই বাইডেন-যুগের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে, যা আমিরাতের জন্য বড় সুখবর। কাতার: কূটনীতির মধ্য দিয়ে প্রভাব বজায় রাখার প্রচেষ্টামধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে কাতারে, যা দু’দেশের সম্পর্কের ভিত মজবুত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র কাতারকে Major Non-NATO Ally হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং সামরিক চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে আরও ১০ বছর। কাতার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংকটে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে—গাজা, আফগানিস্তান এবং সিরিয়াসহ। দেশটি চায়, সিরিয়ার ওপর আরোপিত সিজার অ্যাক্টের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক, যাতে কাতার সিরিয়ার পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই সফর পারস্পরিক লাভের হিসাবেই হচ্ছে। উপসাগরীয় দেশগুলো চায় মার্কিন সুরক্ষা ও প্রযুক্তি, আর ট্রাম্প চাচ্ছেন ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ও বড় চুক্তি। সফরের সময় বড় চুক্তি ও অর্থনৈতিক ঘোষণা আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য (০)