ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

অন্যান্য

৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস: আসলে গ্রাহক কতটা গতি পাচ্ছেন?

৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস: আসলে গ্রাহক কতটা গতি পাচ্ছেন? Image প্রতীকী ছবি | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য বড়সড় ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারনেট সেবাদাতারা। ৫০০ টাকার মাসিক খরচে এখন ১০ এমবিপিএস গতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ পাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এতে সাধারণ গ্রাহকের মাঝে আশার সঞ্চার হলেও বাস্তব অভিজ্ঞতা ভিন্ন গল্প বলে।ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, পুরোনো ৫ এমবিপিএস প্যাকেজের পরিবর্তে এখন গ্রাহক পাবেন ১০ এমবিপিএস। এই ঘোষণা আসে চার বছর আগের বিটিআরসির ‘এক দেশ, এক রেট’ নীতির পরিপ্রেক্ষিতে, যেখানে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকায় ৫ এমবিপিএস সংযোগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।তবে প্রশ্ন থেকে যায়—এই ঘোষণায় গ্রাহকরা কি সত্যিই ১০ এমবিপিএস পাচ্ছেন?বাস্তবতা হলো, অনেক গ্রাহক এখনো প্রতিদিনের ব্যবহার অভিজ্ঞতায় ঘোষিত গতির চেয়ে অনেক কম গতি পাচ্ছেন। যেমন রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ফয়সাল আহমেদ জানান, তিনি ৫ এমবিপিএস প্যাকেজে গড়ে ২ থেকে ৩ এমবিপিএস গতি পান।এর পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে ভাগাভাগির নীতি, যেটি আইএসপিগুলো অনুসরণ করে থাকে। এক সংযোগ একাধিক গ্রাহকের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হয়। বিটিআরসির নিয়ম অনুযায়ী, একটি কানেকশন সর্বোচ্চ আটজনের মধ্যে ভাগ করা যাবে। ফলে নির্ধারিত গতির পুরোটা গ্রাহকরা এককভাবে পান না।সাতক্ষীরার একটি আইএসপি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আশিকুল বাশার বলেন, “ভাগাভাগির ভিত্তিতে ১০ এমবিপিএস সংযোগেও অনেক সময় গ্রাহক গড়ে ৩ এমবিপিএসের বেশি পান না।” তবে একক সংযোগ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, যেখানে গতি নিশ্চিত হলেও খরচ বেড়ে যায় উল্লেখযোগ্যভাবে।এছাড়াও, পিক আওয়ার

ে—বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ইন্টারনেট ব্যবহারের চাপ বেড়ে গেলে—গতিতে প্রভাব পড়ে, যা অনেক সময়ই অভিযোগের কারণ হয়। অন্যদিকে অফপিক আওয়ারে (দিনের বেলা) গতি তুলনামূলক ভালো থাকে।আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক জানান, “আমরা সরকার ও গ্রাহকের প্রত্যাশার জায়গা থেকেই ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস গতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এটা পুরোপুরি নির্ভর করছে ভাগাভাগির নীতির ওপর।”এদিকে গ্রাহকসেবার মান নিয়ে অসন্তোষের কথাও উঠে এসেছে একাধিক মহলে। এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “যদিও ইন্টারনেট খরচ বাংলাদেশে তুলনামূলক কম, তবে যে মানের সেবা দেওয়া হয় তা অনেক নিচু মানের, তাই দামের তুলনায় মানে ভারসাম্য নেই।”বিশ্ব পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওকলা’র সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফিক্সড ব্রডব্যান্ড গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম (মার্চ ২০২৫)। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় এখনো অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ।বর্তমানে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি, আর লাইসেন্সধারী আইএসপি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২,৪১৫টি। তবে আইএসপিএবি জানায়, লাইসেন্সধারী ও অননুমোদিত মিলিয়ে এ সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।শেষ কথা৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট সংযোগের ঘোষণা নিঃসন্দেহে একটি ভালো পদক্ষেপ। তবে বাস্তবে এই গতি নির্ভর করছে ব্যবহারের সময়, শেয়ারিং রেশিও এবং আইএসপির অবকাঠামোর ওপর। গ্রাহকের প্রত্যাশা পূরণে কেবল ঘোষণাই যথেষ্ট নয়, দরকার সঠিক বাস্তবায়ন এবং নিরীক্ষণ।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর