চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের কর্মসূচির সময় হামলার ঘটনায় এক নারীসহ দুজনকে লাথি মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা ঘিরে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।বুধবার (২৮ মে) দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায় প্রেসক্লাবের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়, এক ব্যক্তি ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের আশ্রয় নেওয়া ভবনের নিচে ঢুকে একজনকে পেছন থেকে এবং পরে এক নারীকে প্রকাশ্যে লাথি মারছেন।ভিডিওতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে চেনা গেছে ‘আকাশ চৌধুরী’ নামে, যিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী বলে দাবি করেছেন ছাত্রজোটের নেতারা। তাঁদের ভাষ্য, আকাশ একজন ‘শিবির ক্যাডার’ এবং জামায়াতের সাবেক এক সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ অনুসারী। যদিও শিবির পক্ষ জানিয়েছে, আকাশ বর্তমানে সংগঠনের কোনো দায়িত্বে নেই এবং সংগঠনের কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।ঘটনার সময় প্রেসক্লাবের আশপাশে পুলিশ উপস্থিত ছিল, তবুও ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশ সদস্যের সামনে দিয়েই গিয়ে হামলা চালান। এ নিয়ে ফেসবুকজুড়ে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া
তৈরি হয়েছে।ছাত্রজোটের কর্মসূচিটি ছিল যুদ্ধাপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত। একই সময় একটি পাল্টা মিছিল নিয়ে আসে শাহবাগবিরোধী একটি গ্রুপ, যাদের ব্যানারে লেখা ছিল ‘Anti-Shahbagh Movement’।বেলা তিনটার পর দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। শাহবাগবিরোধী গ্রুপের লোকজন ছাত্রজোটের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, এতে কমপক্ষে ১২ জন আহত হন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে দুই ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে।পরে রাতে কোতোয়ালি থানার সামনে অবস্থান নেন শাহবাগবিরোধী ঐক্যের নেতাকর্মীরা। তাঁরা দাবি করেন, আটককৃতদের মুক্তি না দিলে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থানের পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁরা সরে যান। এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে এবং আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “ভিডিও বিশ্লেষণ করে আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
মন্তব্য (০)