মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একটি বাস ও অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই নারী ও একটি পরিবারের একাধিক সদস্য। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন।বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজদিখানের নিমতলা তালুকদার পাম্পের সামনে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।দুর্ঘটনার বিবরণজানা গেছে, একজন গর্ভবতী নারীকে নিয়ে মাদারীপুর জেলা থেকে ঢাকামুখী হচ্ছিল একটি অ্যাম্বুলেন্স। গাড়িটিতে ছিলেন অসুস্থ নারীর স্বজনরাও। পথিমধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটির একটি চাকা পাংচার হয়ে গেলে সেটি রাস্তার পাশে থামিয়ে চাকা মেরামতের কাজ শুরু করা হয়।দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই সময় অ্যাম্বুলেন্সের পাশে অবস্থান করছিলেন যাত্রীরা। এমন অবস্থায় ঢাকা অভিমুখে আসা ‘গোল্ডেন পরিবহনের’ একটি যাত্রীবাহী বাস সজোরে এসে অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নারী মারা যান এবং বাকি পাঁচজন গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে চারজনকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরাও মারা যান।নিহতদের পরিচয়ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো.

ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতরা হলেন: সামাদ ফকির (৬৫) তাঁর ছেলে বিল্লাল ফকির (৪০) তাঁর মেয়ে আফসানা (২০) অ্যাম্বুলেন্সচালক মাহবুবুল এবং অজ্ঞাত এক নারী (ঘটনাস্থলে নিহত) প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও পুলিশের বক্তব্যস্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রীরা সবাই গাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে বাসের ধাক্কায় তারা সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী বলেন, ‘‘ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছি এবং আহত পাঁচজনকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’অ্যাম্বুলেন্স মালিকের প্রতিক্রিয়াঅ্যাম্বুলেন্সটির মালিক আহম্মেদ সাদিক জানান, “বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গর্ভবতী নারীকে নিয়ে আমাদের গাড়িটি ঢাকা উদ্দেশে রওনা দেয়। পরে জানতে পারি, আমাদের গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়েছে এবং চালক মাহবুবুল মারা গেছেন। আমরা দ্রুত ঢাকায় যাচ্ছি।”এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রসঙ্গত, দেশের মহাসড়কগুলোতে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহনের জন্য নিরাপদ চলাচলের বিষয়টি বারবার আলোচনায় এলেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা ও সচেতনতার ঘাটতির পরিণতি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।