ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল যে নৃশংসতা চালাচ্ছে, তার বড় শিকার শিশুরা। ১৯ মাস ধরে চলা হামলায় উপত্যকাটিতে নিহত হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি শিশু। সে হিসাবে প্রতি ৪০ মিনিটে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।সোমবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মারওয়ান আল-হামস। তিনি বলেন, ইসরায়েলের হামলায় নিহত মোট শিশু ১৬ হাজার ২৭৮ জন। এর মধ্যে ৯০৮ জন একেবারে ছোট শিশু এবং ৩১১ জন নবজাতক রয়েছে।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। চলতি বছরের শুরুর দিকে মাস দুয়েকের যুদ্ধবিরতি চললেও গত ১৮ মার্চ তা লঙ্ঘন করে আবার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এই সময়টাতে সেখানে মোট ৫২ হাজার ৬১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৫২ ফিলিস্তিনি। বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ।সংবাদ সম্মেলনে মারওয়ান আল-হামস বলেন, গত ২ মার্চ থেকে গাজায় কোনো ত্রাণসহায়ত
া প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটিতে সাধারণ মানুষের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। হাজার হাজার শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারী চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। অনেক শিশুকে দিনে একবার খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে খাওয়ার পানির।এরই মধ্যে গাজা ‘দখলের’ নতুন পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। এর অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটির দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে আবার বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকির মুখে পড়েছেন গাজার অধিবাসীরা। মারওয়ান আল-হামস বলেন, উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়া শিশুদের থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালে যেতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে নারীদের।এমন পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার গাজা নিয়ে নতুন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোৎরিচ। তিনি বলেছেন, গাজায় ‘কয়েক মাসের মধ্যে বিজয় ঘোষণার’ অবস্থায় রয়েছেন তাঁরা। খুব শিগগির উপত্যকাটি ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করা হবে। সেখানকার মানুষজনকে দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া হবে। পরে তাঁদের সেখান দিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মন্তব্য (০)