ChatGPT said:চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এবারের কোরবানির ঈদে নির্ধারিত পাঁচটি অস্থায়ী পশুর হাটের মধ্যে চারটির ইজারাই পেয়েছেন বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন যুবদল, কৃষক দল এবং মৎস্যজীবী দলের নেতারা। বিষয়টি নিয়ে নগরজুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক আলোচনার ঝড়।কমেছে রাজস্ব, বেড়েছে দলীয় নিয়ন্ত্রণ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে হাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। কিন্তু ইজারা প্রক্রিয়া শেষে আসল রাজস্ব দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা কম। গত বছর সাতটি হাট থেকে আদায় হয়েছিল ৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। এবার হাটগুলোর ইজারা দর নির্ধারণে বিগত তিন বছরের গড় দরের সঙ্গে ৬% হারে বাড়তি মূল্য সংযোজন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় সব হাটেই নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দর উঠেছে, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্ত ও সময় ব্যবস্থাপনা নিয়ে। কে কোন হাটের ইজারা পেলেন? ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, সিডিএ বালুর মাঠ (আউটার রিং রোড): ইজারা পেয়েছেন বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব মো. নিজাম উদ্দিন। তিনি ১ কোটি ৩০ লাখ ১১১ টাকা দর দিয়ে হাটটি পেয়েছেন, যেখানে গত বছর এই হাটের ইজারা ছিল ২ কোটি ২২ লাখ টাকা। নিজাম উদ্দিন বলেন, "আগে আওয়ামী লীগ নেতারা হাট নিয়ন্ত্রণ করতেন। আমাদের অত অর্থ না থাকলেও নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দিয়েই নিয়েছি।" ৪০ নম্বর ওয়ার্ড, টিএসপি মাঠ (পূর্ব হোসেন আহম্মদপাড়া): ইজারা পেয়েছেন মৎস্যজীবী দলের পতেঙ্গা থানার আহ্বায়ক মো. সালাউদ্দিন। এখানে নির্ধারিত দর ছিল ১৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, কিন্তু তিনি পেয়েছেন মাত্র ৯ লাখ ২০ হাজার টাকায়। ৪১ নম্বর ওয়ার্ড, চরপাড়া (আলমগীর সাহেবের মাঠ): নতুন যুক্ত হওয়া হাটটির ইজারা নিয়েছেন কৃষক দলের নগর আহ্বায়ক মো.
আলমগীর, দর দিয়েছেন ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড, আনন্দ বাজারসংলগ্ন মুনিরনগর: ইজারা পেয়েছেন যুবদলের কর্মী খুরশীদ আলম। সবচেয়ে বড় হাট, কর্ণফুলী পশুর বাজার: ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, যিনি জানান, ১৮ বছর ধরে তিনিই হাটটি পরিচালনা করছেন। এবার ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা নির্ধারিত দরের বিপরীতে তিনি দর দিয়েছেন ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। তিনি বলেন, "হাটের আয়তন কমেছে, অবৈধ হাট বসায় বৈধ হাটে বিক্রেতা-ক্রেতা কম আসে।" রাজনৈতিক উত্তাপ ও হট্টগোল গত ১৭ মে টাইগারপাসে সিডিএ বালুর মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপি ও যুবদলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়, পরে পুলিশ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এই মাঠের ইজারাও বিএনপিপন্থী নেতা নিজাম উদ্দিনের হাতে চলে গেছে। সিটি করপোরেশনের অবস্থান সিটি করপোরেশনের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী দাবি করেন, "নিয়ম অনুযায়ীই ইজারা দেওয়া হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়।" তবে তিনি স্বীকার করেন, "এবার প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায় হয়নি।" তিনটি হাটে ইজারাদার না পাওয়া ও কম দর পড়ায় সিটি করপোরেশন নিজেই পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিবর্তন শুধু চেহারায়, পদ্ধতিতে নয় গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগ সরকার, সেই প্রেক্ষাপটে এবারই প্রথম নগরে কোরবানির হাট বসছে। নতুন সরকারে আশা নিয়ে সাধারণ মানুষ আশাবাদী হলেও বাস্তবে হাট ইজারার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব ও দলীয় ভাগ-বাটোয়ারা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, "আগের সরকারের সময় যেমন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি চলত, এখনো তা-ই চলছে। শুধু সুবিধাভোগীদের চেহারা বদলেছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।" সংক্ষেপে চিত্র: ৫টি হাটের মধ্যে ৪টির ইজারা বিএনপিপন্থী নেতাদের হাতে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা কম নিয়মিত দরপত্রের তুলনায় অধিকাংশ হাটে কম দর রাজনৈতিক চাপ ও দখলের অভিযোগ স্পষ্ট
মন্তব্য (০)