ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ফের বাস ডাকাতির ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২০ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে আজ বুধবার (২১ মে) ভোর ৫টা পর্যন্ত দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা ধরে একটি যাত্রীবাহী বাসে লুটপাট চালায় সশস্ত্র ডাকাত দল। এ সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।জানা গেছে, ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রংপুরগামী আল ইমরান পরিবহনের একটি বাস রাত ৮টার দিকে যাত্রা করে। বাসটিতে প্রায় ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১০ জন নারী। বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীবেশে থাকা ৮-১০ জন ডাকাত হঠাৎ দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে চালকের নিয়ন্ত্রণ নেয়।ডাকাত দল চালক, হেলপার ও সব যাত্রীর চোখ–মুখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে বাসটি যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে ঘুরিয়ে পুনরায় ঢাকার দিকে চলতে থাকে। চলাচলের পুরো সময়জুড়ে প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়।ডাকাতির সময় নারী যাত্রীদের শরীর তল্লাশির নাম করে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়, অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। এক নারী যাত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে ডাকাতদের অনুরোধ করছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।বাসের চালক আবেদ

আলী বলেন, “সারা রাত বাস নিয়ে ডাকাত দল কয়েকবার চক্রাকারে টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া পর্যন্ত ঘুরে বেড়ায়। শেষ পর্যন্ত ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বাসটি ফেলে চলে যায় টাঙ্গাইল বাইপাসের শিবপুর এলাকায়।”পরে বাসের যাত্রী ও কর্মীরা সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। এ সময় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের বক্তব্য শোনেন।বাসের যাত্রী জুয়েল মিয়া জানান, “আমার চোখ-মুখ বাঁধা থাকলেও নারী যাত্রীদের কান্না ও ডাকাতদের সঙ্গে তাদের মিনতির শব্দ শুনতে পাই। তারা টাকা-পয়সা নেওয়ার সময় নারী যাত্রীদের গায়ে হাত দিয়েছে।”আরেক যাত্রী আকাশ মিয়া বলেন, “ডাকাতরা একাধিকবার আমাদের শরীর তল্লাশি করে, যার যা কিছু ছিল সব নিয়ে গেছে। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আমরা কিছুই করতে পারিনি।”টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহমদ বলেন, “এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ডাকাত চক্রকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।” উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একই মহাসড়কে ইউনিক রয়েলস নামের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। আরও আগে ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছিল।