ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী বৈশাখী ইসলামের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের একজন ফেসবুক লাইভে এসে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার বিকেলে, আর সোমবার সকাল ১০টায় সাগর কাজী নামের অভিযুক্ত ব্যক্তি অজ্ঞাত স্থান থেকে লাইভে এসে তার বক্তব্য তুলে ধরেন।হামলার অভিযোগ বৈশাখীরভুক্তভোগী বৈশাখী ইসলাম অভিযোগ করেন, “আমাকে রাস্তায় ফেলে চুলের মুঠি ধরে বেধড়ক মারধর করেছে ডাঙ্গী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ইসকান্দার কাজী, তার ছেলে সাগর কাজী, ফয়সালসহ আরও কয়েকজন।” এই ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং নিরাপত্তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়।লাইভে অভিযুক্তের পাল্টা অভিযোগসাগর কাজী ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, “সামান্য একটি ঘটনা নিয়ে বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান এটি রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে ফেলেছেন। তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “যখন আপনার সঙ্গে ব্যানার করেছি তখন চিনলেন, এখন বিপদে পড়ে আমাকে অচেনা বানিয়ে দিচ্ছেন?” তার দাবি, বদিউজ্জামান প্রকাশ্যে বলছেন সেদিন সেখানে বিএনপির কেউ ছিল না, অথচ বাস্তবে তাঁর ভাই দুদু মোল্লাও উপস্থিত ছিলেন।মারধরের অভিযোগ অস্বীকারসাগর কাজী নিজের ও বাবার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “২০-২৫ মিনিট কেউ কাউকে পেটালে তার এক সপ্তাহ হ
াসপাতালে থাকার কথা। অথচ এখন বলা হচ্ছে আমরা পিটিয়েছি! এসব মিথ্যা অভিযোগ আমাদের পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য করা হচ্ছে।” “প্রতিদিন আমার বাড়িতে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী আসছে। আমি এখন খেতেও পারি না, ঘুমাতেও পারি না,”— বলেন তিনি।বিএনপি নেতার বক্তব্যনগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বদিউজ্জামান ওরফে তারা মোল্লা বলেন, “সাগর আমার লোক নয়। সে যুবলীগ নেতা ফরহাদের অনুসারী। তারা বিএনপিকে জড়িয়ে হেনস্তা করার চেষ্টা করছে।” তিনি আরও বলেন, “সাগর যদি আমার দলে থাকত, আমি চিনতাম। ওদের দলে নিলে তো আমাকে দল থেকেই বের করে দিত।”ভিন্নধর্মী প্রতিক্রিয়া বৈশাখীরহামলার শিকার বৈশাখী ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তিনি তাঁর ছোট বোনকে উত্ত্যক্ত করার বিচার চাইতে গিয়েছিলেন। সেখানেই এ হামলার শিকার হন। বিএনপি নেতারা পরদিন তাঁর বাসায় দেখা করতে গেলে তিনি বলেন, “এরা সুবিধাবাদী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ওদের সঙ্গে থাকত, এখন বিএনপির সঙ্গে ছবি তোলে।”মামলা ও গ্রেপ্তার ঘটনার পর দিন রাত ১০টা পর্যন্ত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। নগরকান্দা সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল জানান, “এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি করেছেন বৈশাখী ইসলাম এবং একটি পুলিশ বাদী হয়ে করেছে। এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
মন্তব্য (০)