রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে আগামী ১৫ মে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের চাপের মধ্যে তিনি এই প্রস্তাব দেন। তারা এর আগে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।শনিবার রাতে ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক বিরল টেলিভিশন ভাষণে পুতিন বলেন, “আমরা একটি স্থায়ী ও শক্তিশালী শান্তির জন্য গঠনমূলক আলোচনা করতে প্রস্তুত।" ইউরোপীয় নেতাদের চাপএই ঘোষণার আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মানির ফ্রিডরিখ মার্জ এবং পোল্যান্ডের ডোনাল্ড টাস্ক কিয়েভ সফর করেন। তারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি'র সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন এবং রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান “স্থল, জল ও আকাশপথে ৩০ দিনের সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি” কার্যকর করতে।তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি রাশিয়া এই যুদ্ধবিরতি না মানে, তাহলে রাশিয়ার জ্বালানি ও ব্যাংক খাতে নতুন ও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। পুতিনের আলোচনার প্রস্তাবপুতিন তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া সরাসরি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।” তিনি আলোচনার স্থান হিসেবে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের প্রস্তাব দেন এবং বলেন, তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে রবিবার আলোচনা করবেন।তবে এখন পর্যন্ত কিয়েভ এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। ইউক্রেনের অনাস্থাএর আগে ইউক্রেন রাশিয়ার প্রস্তাবিত একতরফা তিনদিনের
যুদ্ধবিরতিকে "একটি নাটকীয় প্রদর্শনী" বলে প্রত্যাখ্যান করে। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়ার পক্ষ থেকে দেওয়া আগের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবগুলোর একটিতেও বাস্তব কার্যকারিতা ছিল না। সংঘর্ষে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগতথাকথিত যুদ্ধবিরতির দিন ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ৭৩০টিরও বেশি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে এবং জানায় তারা “উপযুক্ত জবাব” দিচ্ছে।অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে তারা যুদ্ধবিরতি মানছে, বরং ইউক্রেনই ৪৮৮ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। পেসকভের মন্তব্যরাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “এই প্রস্তাব অবশ্যই নতুন, তবে আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে কিছুই আদায় করা যাবে না।” ইউরোপের মন্তব্যগুলোকে তিনি "বিরোধপূর্ণ ও সম্পর্ক নষ্টকারী" বলেও অভিহিত করেন। পুতিনের বার্তা: "শান্তি চাই, কিন্তু সত্যিকারের"পুতিন আরও বলেন,“যে শান্তি হবে কেবলমাত্র নতুন অস্ত্র আসার আগে সাময়িক বিরতি, তেমন শান্তির কোনো দরকার নেই। আমরা চাই এমন শান্তি, যা স্থায়ী এবং দীর্ঘমেয়াদী।”তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেন পূর্বেও বিভিন্ন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি, যার মধ্যে ছিল ইস্টার যুদ্ধবিরতি এবং বিশ্বযুদ্ধ স্মরণে ঘোষিত এপ্রিলের যুদ্ধবিরতি। শেষবার মুখোমুখি আলোচনা কবে?রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সর্বশেষ সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২২ সালে, যখন রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন শুরু করে।আপডেট থাকুন | সত্য, নিরপেক্ষ ও বিশ্লেষণভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
মন্তব্য (০)