ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

ভারত

নিশানা বারবার মুসলমানরা কেন? — ভারতীয় মুসলমানদের দেশপ্রেমের পরীক্ষা বন্ধ হবে কবে?

নিশানা বারবার মুসলমানরা কেন? — ভারতীয় মুসলমানদের দেশপ্রেমের পরীক্ষা বন্ধ হবে কবে? Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার পরপরই ভারতজুড়ে মুসলিমবিদ্বেষের ঢেউ শুরু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতে মুসলমানদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলার প্রবণতা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। অথচ হামলার ঘটনায় ভারতীয় মুসলমানরা ছিলেন সম্পূর্ণ নির্দোষ, এমনকি তাঁরাই এ ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন।কবি ও গবেষক নাবিয়া খানের মতে, এপ্রিলের সেই হামলার পর মাত্র দুই সপ্তাহে দেশজুড়ে ১৮৪টি মুসলিমবিরোধী ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এইসব ঘটনার মধ্যে আছে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, ভয় দেখানো, হামলা, হত্যা এবং গালিগালাজ—যা সমাজে একটি গভীর অসহিষ্ণু মানসিকতার ইঙ্গিত দেয়।অপারেশন সিঁদুর: আড়ালে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াপেহেলগাম হামলার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তানবিরোধী সামরিক অভিযান চালায়। যদিও এটি ছিল সীমান্ত পারাপারের সামরিক পদক্ষেপ, এর প্রতিক্রিয়া ভারতীয় অভ্যন্তরে মুসলমানদের প্রতি বৈরিতা ও অবিশ্বাসের আকারে প্রকাশ পায়।দেশের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুসলমানদের ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দিয়ে কুৎসা রটানো হয়। তাঁরা যেন ভারতের নাগরিক নন, বরং একটি শত্রুপক্ষের প্রতিনিধি—এমন ধারণা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলে।কাদের দেশপ্রেম সন্দেহজনক?ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়লেই যেন ভারতীয় মুসলমানদের ‘পাকিস্তানি অনুগত’ বলে সন্দেহ করা শুরু হয়। তাঁদের জায়গা, পরিচয়, নাগরিক অধিকার—সবকিছু প্রশ্নবিদ্ধ হয়। লেখক হুসেন হায়েদ্রির ভাষায়, ‘মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোকে মিনি পাকিস্তান বলা হয়, ক্রিকেট ম্যাচ হলে তাঁদের পাকিস্তান সমর্থক বলা হয়—এমনকি বলা হয় “পাকিস্তানে চলে যাও”।’এ যেন প্রতিবারই দেশপ্রেমের একটি জোরপূর্বক পরীক্ষা, যার দায়ভার চাপানো হয় মুসলমানদের ওপর।সহিংসতার উন্মুক্ত মঞ্চসম্প্র

তি আম্বালায় দেখা গেছে মুসলিম মালিকানাধীন দোকানে আগুন দেওয়ার ঘটনা, যেখানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং সুসংগঠিত উগ্র গোষ্ঠীর পরিকল্পিত তাণ্ডব।এভাবে “দেশপ্রেম”কে এখন মুসলিমবিরোধী ঘৃণা ছড়ানোর মোড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের নাগরিকত্বকে শর্তসাপেক্ষ বানিয়ে তোলা হচ্ছে—যেখানে দেশপ্রেম প্রমাণ করতে না পারলে, আপনি সমাজে টিকে থাকার অধিকার হারাতে পারেন।লাঞ্ছনার দেশপ্রেমবিশ্লেষক সারা আথার বলেন, “ভারতীয় মুসলমানদের শুধু দেশকে ভালোবাসলেই চলবে না, তাঁদের পাকিস্তানকে ঘৃণা করেও প্রমাণ দিতে হবে যে তাঁরা দেশপ্রেমিক।” সাংবাদিকেরা মাইক্রোফোন ঠেলে দিয়ে জোর করে ‘পাকিস্তানবিরোধী’ বিবৃতি আদায় করার চেষ্টা করেন—এ যেন একপ্রকার অপমান, যা কখনোই প্রকৃত দেশপ্রেম হতে পারে না।রাজনীতির নীরবতা, মানুষের সর্বনাশসবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, এই মুসলিমবিদ্বেষী পরিস্থিতিতে বিরোধী দলসহ মূলধারার রাজনৈতিক নেতারা নীরব। এ নীরবতা ঘৃণাকে বৈধতা দেয়, আইনকে অকার্যকর করে তোলে, আর অপরাধীদের উৎসাহ দেয়।এর ভয়াবহ পরিণতি আমরা দেখতে পাই সেই মুসলিম যুবকের আত্মহত্যার ঘটনায়, যাকে একজন সাংবাদিক প্রকাশ্যে ‘পাকিস্তানি’ বলে অপবাদ দিয়েছিল।প্রশ্নটা দেশপ্রেম নয়, গ্রহণযোগ্যতারআজ ভারতের মুসলমানদের বড় প্রশ্ন হলো—তাঁরা দেশের প্রতি কতটা অনুগত, সেটা নয়; বরং দেশ তাঁদের নিজের মতো করে গ্রহণ করতে প্রস্তুত কি না।যে গণতন্ত্র নাগরিকদের ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে দেশপ্রেম যাচাই করে, তা আর গণতন্ত্র থাকে না; বরং হয়ে ওঠে সংখ্যাগরিষ্ঠের একনায়কত্ব। তাই ভারতের মুসলমানরা আজ এমন এক লড়াইয়ের মধ্যে পড়েছেন, যার শুরু তাঁদের নয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর