কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার জবাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত। পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকিস্তানের কৃষিজমির জন্য গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানিপ্রবাহ হ্রাস করতে উদ্যোগ নিচ্ছে দিল্লি। চুক্তি ‘স্থগিত’ ভারতের১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তিতে ভারতের অংশগ্রহণ ‘স্থগিত’ ঘোষণা করা হয়েছে।চুক্তিটি সিন্ধু, চেনাব ও ঝিলম নদীর পানি বণ্টনের বিষয় নির্ধারণ করে।ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর নয়াদিল্লি এই সিদ্ধান্ত নেয়। রণবীর খাল সম্প্রসারণের পরিকল্পনাচেনাব নদীর রণবীর খালের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ (১২০ কিমি) করার পরিকল্পনা রয়েছে।খাল সম্প্রসারণের মাধ্যমে বর্তমানে ৪০ ঘনমিটার/সেকেন্ড থেকে ১৫০ ঘনমিটার/সেকেন্ড পানি ব্যবহারের সুযোগ পাবে ভারত।এতে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে সেচের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পানি সরবরাহ হুমকির মুখে পড়বে। ভারতের অবস্থানপ্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “রক্ত ও পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।”পানিসম্পদমন্ত্রী সি আর পাতিল বলেন, “এক ফোঁটা পানিও যেন পাকিস্তানে না যায়, তা নিশ্চিত করা হবে।” পাকিস্তানের হুঁশিয়ারিপাকিস্তান বলেছে, পান

িপ্রবাহ বন্ধ বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার যেকোনো চেষ্টা 'যুদ্ধের শামিল' হবে।পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দার জানান, চুক্তি স্থগিত করাকে অবৈধ ঘোষণা করে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চুক্তি ভাঙার ঝুঁকিসিন্ধু পানি চুক্তিকে বিশ্বের অন্যতম সফল পানিবণ্টন চুক্তি হিসেবে দেখা হয়।৮০% কৃষিজমি ও প্রায় সব পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প এই পানি ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। ভারতের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা৫টি বড় জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে ৪টি চেনাব ও ঝিলমের উপনদীতে।পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩,৩৬০ মেগাওয়াট থেকে ১২,০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করতে চায় ভারত। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগপাকিস্তান বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক আদালত, সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।মার্কিন বিশেষজ্ঞ ডেভিড মিশেল সতর্ক করেছেন, পানি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হলে চীনও ভারতের বিরুদ্ধে একই কৌশল নিতে পারে।ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার পানির রাজনীতি শুধু দুই দেশের সম্পর্ককেই প্রভাবিত করছে না, এটি আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে সমাধান না হলে এটি ভবিষ্যতে আরও জটিল রূপ নিতে পারে।