মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইয়েমেনে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সালেম বিন বুরাইক। শনিবার (৩ মে) এ সংক্রান্ত একটি রাষ্ট্রপতি ডিক্রি জারি করেন প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রাশাদ আল-আলিমি।সালেম বিন বুরাইক এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবার তিনি পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারকের স্থলাভিষিক্ত হলেন।সরকারি আদেশে নতুন দিকনির্দেশনাসাবা নিউজ এজেন্সির বরাতে জানা যায়, ডিক্রির প্রথম অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, সালেম বিন বুরাইককে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সরকারের অন্যান্য সদস্যরা নতুন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন।ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পদত্যাগ আহমেদ বিন মুবারকেরএকই দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী আহমেদ বিন মুবারক পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর সংবিধানগত ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে বারবার বাধা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করত
ে গিয়ে তিনি নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন।জানা গেছে, তিনি প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমির সঙ্গে একাধিকবার মতবিরোধে জড়ান। এমনকি মন্ত্রিসভার ১২ জন সদস্যকে বরখাস্ত করার অনুরোধও করেছিলেন, যা প্রত্যাখ্যাত হয়। এই ঘটনায় দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে স্পষ্ট ক্ষমতার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের মাধ্যমে পরিণতি পায়।গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত ইয়েমেনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটইয়েমেন গত এক দশকের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত। ২০১৪ সালে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে উৎখাত করে। এরপর থেকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর এডেনে পালিয়ে যায় সেই সরকার। বর্তমানে উত্তর ও পশ্চিম ইয়েমেনজুড়ে হুথিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব একদিকে যেমন শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত করছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী সালেম বিন বুরাইক দায়িত্ব গ্রহণের পর এই সংকট মোকাবেলায় কী পদক্ষেপ নেবেন, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
মন্তব্য (০)