ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

যুক্তরাষ্ট্র

হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধে পিছু হটল যুক্তরাষ্ট্র: কী কারণে ব্যর্থ হল ‘অপারেশন রাফ রাইডার’?

হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধে পিছু হটল যুক্তরাষ্ট্র: কী কারণে ব্যর্থ হল ‘অপারেশন রাফ রাইডার’? Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

২০২৫ সালের বসন্তে লোহিত সাগর রূপ নেয় এক উত্তপ্ত যুদ্ধক্ষেত্রে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র, অপরদিকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। আঞ্চলিক উত্তেজনার আবহে হুতিরা আন্তর্জাতিক জাহাজে হামলা বাড়িয়ে তোলে। এর জবাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন ‘অপারেশন রাফ রাইডার’ নামের বড় ধরনের সামরিক অভিযান।১ বিলিয়ন ডলারের অপারেশন, ফলাফল শূন্য!হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয় এই অভিযান। প্রায় ৮০০ জায়গায় বিমান হামলা চালানো হলেও হুতিদের শক্তিমত্তায় বিশেষ আঘাত আসেনি। বরং হুতিরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। মার্কিন যুদ্ধজাহাজও তাদের টার্গেট থেকে বাদ যায়নি।কেন ব্যর্থ হল যুক্তরাষ্ট্র?১. কেবল সামরিক সমাধানের ওপর নির্ভরতালোহিত সাগরের সংকট শুধু অস্ত্র দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়। এটি ইয়েমেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতির সাথে গভীরভাবে জড়িত। এই বাস্তবতাকে আমলে না নেয়ায় কৌশলগত ভুল হয়।২. আঞ্চলিক সমন্বয়ের অভাবসৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয় না থাকায় অভিযান আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।৩.

অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনাট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সামরিক পরিকল্পনার তথ্য ‘সিগন্যাল অ্যাপ’-এ ফাঁস হয়ে যায়, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা স্পষ্ট করে।যুদ্ধবিরতি: আত্মসমর্পণ না কৌশলগত সিদ্ধান্ত?অভিযান শুরুর দুই মাস পর, ৬ মে ট্রাম্প ঘোষণা দেন যুদ্ধবিরতির। ওমানের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী, হুতিরা মার্কিন জাহাজে হামলা বন্ধ করবে আর যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে বোমা হামলা বন্ধ করবে।কিন্তু ইসরায়েলকে না জানিয়েই ট্রাম্প এই চুক্তি ঘোষণা করেন, যা মিত্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি করে। হুতিরা পরে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে চুক্তির সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট করে দেয়।‘যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয়’—হুতিদের দাবিচুক্তির পর হুতি নেতা আবদুল-মালিক আল-হুতি একে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বড় পরাজয়’ বলে ঘোষণা দেন। ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এই চুক্তিকে আখ্যা দেয় ‘আত্মা বিক্রির চুক্তি’ হিসেবে। তাদের মতে, এতে হুতিদের নিয়ন্ত্রণ আরও মজবুত হবে।মূল কারণগুলো সংক্ষেপে:কৌশলগত বাস্তবতা উপেক্ষা করে শুধু সামরিক পদক্ষেপে মনোযোগ।মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয়ের ঘাটতি।প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতা ও তথ্য ফাঁস।হুতিদের প্রতিরোধ সক্ষমতার ভুল হিসাব।এই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কৌশলগত ব্যর্থতার এক স্পষ্ট উদাহরণ। ট্রাম্প প্রশাসনের উচ্চাভিলাষী সামরিক পরিকল্পনা বাস্তবভিত্তিক বিশ্লেষণ ছাড়া শুরু হয়েছিল। ফলাফল—হুতিদের শক্তি বৃদ্ধি ও যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক বিশ্বাসযোগ্যতার পতন।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর