মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার কোনো ইচ্ছা পোষণ করেন না। যদিও তিনি একাধিকবার প্রকাশ্যে পাওয়েলকে সমালোচনা করেছেন, বিশেষ করে সুদের হার না কমানো নিয়ে।মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেন, “আমি তাকে (পাওয়েল) বরখাস্ত করতে চাই না, কিন্তু আমি চাই সে সুদের হারে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিক।”সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ফেড প্রধানকে ‘বড় রকমের ব্যর্থ’ বলে অভিহিত করেন। এই মন্তব্যের পর মার্কিন স্টক মার্কেট, বন্ড এবং ডলারের বাজারে বড় ধরনের ধস নামে, যদিও পরবর্তীতে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়।এর আগে, ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট জানান, ট্রাম্প ফেড প্রধানকে অপসারণ করা সম্ভব কি না তা খতিয়ে দেখছেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত ফেডের চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করেননি।সাবেক ও বর্তমান প্রেসিডেন্টদের মনোনয়নজেরোম পাওয়েলকে প্রথম ২০১৭ সালে ট্রাম্পই ফেডের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দেন। পরে ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য পুনঃমনোনয়ন দেন।চলতি বছরে এখনো ফেড সুদের হার কমায়নি। গত বছরের শেষ দিকে একবার সুদের হার এক শতাংশ কমানো হয়েছিল, যেটিকে ট্রাম্প ‘অপর্যাপ্ত’ বলে সমালোচনা করেছেন।চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের আশাএকই দিন, ট্রাম্প বলেন তিনি বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় "খুবই ভদ্র" থাকবেন। তবে কোনো চুক্তি হলেও আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণভাবে উঠিয়ে নেওয়া হ
বে না, বরং তা "শূন্যে নামানো হবে না" বলে জানান তিনি।যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টও বলেন, চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ এখন আর টেকসই নয় এবং তা কমিয়ে আনার প্রয়োজন রয়েছে।এই মন্তব্যের পর বুধবার এশিয়ার প্রধান শেয়ারবাজারগুলোতে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১.৭%, হংকংয়ের হ্যাং সেনগ ২.৩% এবং চীনের শাংহাই কম্পোজিট সূচক ০.১% বাড়ে।মার্কিন বাজারেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২.৫% এবং নাসডাক ২.৭% বেড়ে বন্ধ হয়।বাণিজ্য শুল্ক ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে শঙ্কাবিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, সুদের হার কমাতে চাপ দেওয়া হলে বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, বিশেষ করে যখন চীনের উপর আরোপিত শুল্ক এরই মধ্যে পণ্যের দামে প্রভাব ফেলছে।আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস অন্যান্য উন্নত অর্থনীতির তুলনায় সবচেয়ে বেশি কমানো হয়েছে, যার পেছনে বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তা ও শুল্কমূল্য বৃদ্ধিই মূল কারণ।ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে চীনা পণ্যের উপর সর্বোচ্চ ১৪৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে এবং আগামী জুলাই পর্যন্ত অন্য দেশগুলোর জন্য ১০% হারে শুল্ক প্রযোজ্য থাকবে।যদি সব নতুন শুল্ক কার্যকর হয়, তবে চীনা পণ্যের উপর মোট শুল্ক ২৪৫% পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে এবং “শেষ পর্যন্ত লড়াই করার” ঘোষণা দিয়েছে।তবে এখনো পর্যন্ত চীনের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের সর্বশেষ মন্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।
মন্তব্য (০)