উত্তর কোরিয়ায় একটি নতুন যুদ্ধজাহাজের ব্যর্থ সূচনার ঘটনায় দেশটির শীর্ষ একজন সামরিক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন, জানিয়েছে সরকারি বার্তা সংস্থা কেসিএনএ। ৫,০০০ টন ওজনের ডেস্ট্রয়ার উল্টে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তঘটনাটি ঘটে গত সপ্তাহে, যখন উত্তর কোরিয়ার ৫,০০০ টন ওজনের একটি নতুন যুদ্ধজাহাজ (ডেস্ট্রয়ার) উদ্বোধনের সময় উল্টে গিয়ে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশটির নেতা কিম জং উন এ ঘটনাকে "অপরাধমূলক কাজ" এবং "জাতির মর্যাদা ও গর্বের প্রতি আঘাত" হিসেবে আখ্যা দেন। গ্রেপ্তার হলেন মিউনিশন শিল্প বিভাগের উপপরিচালককেসিএনএ জানায়, রি হিয়ং-সন, যিনি ওয়ার্কার্স পার্টির মিউনিশন ইন্ডাস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক, তিনি এই ব্যর্থতার জন্য "প্রধানভাবে দায়ী" ছিলেন।তিনি একইসঙ্গে পার্টির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের সদস্য, যা উত্তর কোরিয়ার সামরিক নীতিমালা বাস্তবায়ন ও সেনাবাহিনী পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। জাহাজ মেরামতে বিশেষজ্ঞ দল নিয়োজিতক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি বর্তমানে বিশেষজ্ঞ দল পরিচালিত মেরামতের আওতায় রয়েছে। জাহাজ তৈরির কারখানার তিন কর্মকর্তাও আটকএই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিসেবে চংজিন শিপইয়ার্ডের তিনজন কর্মকর্তা – প্রধান প্রকৌশলী, নির্মাণ প্রধান ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক – ইতোমধ্যে আটক হয়েছেন। কিম জং উনের কঠোর মন্তব্যকিম বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে "চ
রম অবহেলা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও বিজ্ঞানবিরোধী পরীক্ষানির্ভরতায়"।যদিও তাদের কী ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে তা স্পষ্ট নয়, তবে উত্তর কোরিয়া দোষী কর্মকর্তাদের জোরপূর্বক শ্রম শিবিরে প্রেরণ কিংবা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দিয়ে থাকে। বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি: সেনা আধুনিকীকরণই মূল লক্ষ্যঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর কোরিয়া বিশ্লেষক এডওয়ার্ড হাওয়েল বলেন, এই দ্রুত প্রতিক্রিয়া দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বার্তা যে, উত্তর কোরিয়া তাদের নৌবাহিনী শক্তিশালীকরণে থামবে না।ডেইলি এনকে বলছে, কিমের এমন 'স্বচ্ছতা' ইঙ্গিত দেয় যে নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এমন "পাবলিক ব্যর্থতাও সামগ্রিক সামরিক উন্নয়নের ধারাকে থামাতে পারবে না"। নতুন যুদ্ধজাহাজকে ‘ব্রেকথ্রু’ বলেছিলেন কিমএর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে কিম আরেকটি যুদ্ধজাহাজ উন্মোচন করেন, যেটিকে তিনি উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে একটি 'ব্রেকথ্রু' হিসেবে অভিহিত করেন।তিনি জানান, নতুন জাহাজটি আগামী বছরের শুরুতেই কার্যকরভাবে মোতায়েন করা হবে।যুদ্ধজাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তর কোরিয়ার কড়া প্রতিক্রিয়া দেশটির সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রবল আগ্রহকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে। একইসঙ্গে, এ ঘটনাকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতার কৌশল ও আন্তর্জাতিক বার্তার কৌশলও সুস্পষ্ট।
মন্তব্য (০)