চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়কালে দেশের মোবাইল অপারেটর খাতের শীর্ষ দুই প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবি আজিয়াটা আর্থিকভাবে ভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। এই প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের আয় ও মুনাফা উভয়ই কমেছে, অপরদিকে রবি আয় কমলেও মুনাফা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।গ্রামীণফোন জানুয়ারিমার্চ প্রান্তিকে মোট ৬৩৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, যেখানে গত বছর একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ১,৩৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ প্রান্তিকেই মুনাফা কমেছে প্রায় ৫৩ শতাংশ বা ৭০৪ কোটি টাকা। অপরদিকে, রবি এই সময়কালে ১২৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮ কোটি টাকা বেশি; বৃদ্ধির হার প্রায় ১৭ শতাংশ।আয়ের দিক থেকে দেখা যায়, গ্রামীণফোনের ব্যবসা কমে হয়েছে ৩,৮৩৫ কোটি টাকা, যেখানে গত বছর ছিল ৩,৯৩৩ কোটি টাকা। আর রবির ব্যবসা নেমে এসেছে ২,৩৪১ কোটি টাকায়, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২,৫১৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ রবির আয় কমেছে ১৭৫ কোটি টাকা, তবে তা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা বাড়াতে পেরেছে।রবির এই মুনাফা বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে: বিক্রি ও বিতরণ খাতে ব্যয় কমেছে: গত বছর ছিল ৩৮৭ কোটি টাকা, এ
বার নেমে এসেছে ২৮০ কোটিতে। ব্যাংকঋণের সুদ কমেছে: আগের প্রান্তিকে ছিল ১৮৩ কোটি টাকা, যা এবার হয়েছে ১৬৯ কোটি টাকা। কর বাবদ ব্যয়ও হ্রাস পেয়েছে: যা কমে ১৬২ কোটি টাকা থেকে হয়েছে ১০৪ কোটি টাকা। এই তিনটি খাতে ব্যয় হ্রাস পাওয়াই রবির মুনাফা বাড়ার প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী এবং প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এম রিয়াজ রশিদ জানান, “গত এক বছরে আমরা ডেটার দাম প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছি, যার ফলে ডেটা ব্যবহার বাড়লেও রাজস্বে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি হয়নি। উপরন্তু দাম কমে যাওয়ার বিষয়টি কোম্পানির জন্য একটি চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।”তিনি আরও বলেন, “মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ জনগণের ব্যয় বেড়ে গেছে, যার নেতিবাচক প্রভাব আমাদের আয়ের ওপর পড়েছে। তবে আমরা আশাবাদী, দেশের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে এবং আমরাও আরও ভালো ফলাফল উপস্থাপন করতে পারব।” সব মিলিয়ে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোন ব্যবসা ও মুনাফায় রবির চেয়ে এগিয়ে থাকলেও, মুনাফার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে রবি কৌশলগত সফলতা দেখাতে পেরেছে, যা ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।
মন্তব্য (০)