ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

সুস্থতা

শিশুকে নিয়মিত মাটিতে খেলতে দেওয়া কেন জরুরি? জানুন বিজ্ঞান কী বলছে

শিশুকে নিয়মিত মাটিতে খেলতে দেওয়া কেন জরুরি? জানুন বিজ্ঞান কী বলছে Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

আজকের দিনে পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আমরা যতটা সচেতন, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকা। বিশেষ করে শিশুদের মাটিতে খেলতে দেওয়া শুধু তাদের আনন্দই নয়, বরং শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তুলতেও সাহায্য করে—এ কথা বলছে আধুনিক বিজ্ঞান।মাটির জীবাণু, শিশুর শরীর ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাছোটবেলায় শিশু যখন মাটিতে খেলে, তখন তারা বিভিন্ন প্রাকৃতিক জীবাণুর সংস্পর্শে আসে। এই জীবাণুগুলোর অনেকগুলোই আমাদের দেহের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এগুলোর মাধ্যমে দেহ ভালো ও খারাপ জীবাণুর পার্থক্য করতে শেখে, যা ভবিষ্যতে নানা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।‘গাট মাইক্রোবায়োম’ ও রোগ প্রতিরোধে তার ভূমিকাআমাদের অন্ত্রে রয়েছে কোটি কোটি উপকারী জীবাণু, যাদের সম্মিলিত নাম গাট মাইক্রোবায়োম। এই জীবাণুরা খাবার হজম করতে সাহায্য করে, ভিটামিন তৈরি করে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। শিশুদের জীবনের প্রথম এক বছর এই উপকারী জীবাণুগুলোর গঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। যেসব শিশু স্বাভাবিক ডেলিভারিতে জন্ম নেয় ও মায়ের দুধ খায়, তারা প্রথম থেকেই এই উপকারী জীবাণুর সংস্পর্শে আসে। পরবর্তীতে মাটি, গাছপালা, খেলার মাঠ কিংবা পোষা প্রাণীর মাধ্যমে তারা আরও উপকারী জীবাণু পায়।‘ওল্ড ফ্রেন্ডস’ ও ‘হাইজিন’ তত্ত্ব কী বলছে?Old Friends Hypothesis অনুযায়ী, শৈশবে প্রাকৃতিক জীবাণুর সংস্পর্শে আসা শিশুর দেহ ভবিষ্যতের রোগ প্রতিরোধে আরও কার্যকর হয়। এদের বলা হয় ‘পুরোনো বন্ধু’, যারা শরীরের কোনো ক্ষতি করে না বরং রোগ ঠেকাতে সহায়তা করে।অন্যদিকে Hygiene Hypothesis বলে, খুব বেশি পরিষ্

কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বড় হলে শিশুর শরীর প্রয়োজনীয় জীবাণুর সংস্পর্শে আসতে পারে না, ফলে ভবিষ্যতে অ্যালার্জি বা অটোইমিউন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।গবেষণায় দেখা গেছে,কৃষিনির্ভর গ্রামে বড় হওয়া শিশুদের মধ্যে অ্যালার্জির হার কমপোষা প্রাণী থাকলে শিশুর শরীর উপকারী জীবাণু পায় বেশিসিজারিয়ান জন্ম ও অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ায়গবেষণা কী বলছে?ফিনল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা যায়, শহরের শিশুরা যখন বন থেকে আনা প্রাকৃতিক মাটি ও ঘাসে খেলাধুলা করে, মাত্র এক মাসেই তাদের শরীরে উপকারী জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়, এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা সম্পন্ন কোষের সংখ্যা বাড়ে।সুইডেনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, খামারে বড় হওয়া বা পোষা প্রাণী থাকা শিশুদের অ্যালার্জি কম হয়, এবং তাদের গাট মাইক্রোবায়োমে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ঘনত্ব বেশি থাকে।সতর্কতা: সব মাটি নিরাপদ নয়এখানে একটা বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—শহরের রাস্তার ধারে বা দূষিত জায়গার মাটি বিপজ্জনক হতে পারে। এসব মাটিতে সিসার মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকতে পারে, যা শিশুর জন্য বিপজ্জনক।শিশু যেন মাটি খেয়ে বা শুঁকে না ফেলে, সেদিকে নজর রাখা খুবই জরুরি।উপসংহার: শিশুকে প্রকৃতির ছোঁয়া দিনসব বিবেচনায় বলা যায়,শিশুকে মাটিতে খেলতে দেওয়া মানেই তার শরীরকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করা।রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তোলার অন্যতম কার্যকর উপায় হলো শিশুকে প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করানো। তাই অভিভাবক হিসেবে শিশুকে নিয়মিত মাটি, গাছপালা, খেলার মাঠ আর প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকতে দিন—সতর্কতা বজায় রেখেই।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর