শিশু-কিশোরদের কাছ থেকে কোমলতা ও নিষ্পাপ আচরণ প্রত্যাশিত হলেও সাম্প্রতিক কিছু নৃশংস ঘটনার মাধ্যমে সমাজ হতবাক। প্রশ্ন উঠছে—কেন শিশুরা সহিংস হয়ে উঠছে? পারিবারিক বন্ধনের দুর্বলতা শিশুর বিকাশে নিরাপদ পারিবারিক সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভালোবাসা, যত্ন, নিরাপত্তা ও আনন্দের অভাব শিশুর মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অভিভাবকের অবহেলা, অতিসুরক্ষা, তুলনা, শারীরিক-মানসিক শাস্তি শিশুর মনে ক্ষত তৈরি করে।যখন পরিবারে ভালোবাসার ঘাটতি থাকে, শিশুরা ভালোবাসা খুঁজতে ভুল পথে পা বাড়ায়। প্রযুক্তি ও মিডিয়া সহিংসতা সহিংস ভিডিও গেম, চলচ্চিত্র ও সোশ্যাল মিডিয়ায় হিংস্রতা এখন ‘বিনোদন’। শিশুরা বাস্তবতা ও কল্পনার পার্থক্য হারিয়ে সহিংসতা অনুকরণ করে। “হিরো মানেই অস্ত্রধারী”—এই ভুল ধারণা শিশুদের মানসিকতাকে প্রভাবিত করে। স্কুল ও বন
্ধুদের প্রভাব বুলিং, নেতিবাচক বন্ধুবান্ধব, গ্রুপে গ্রহণযোগ্যতার চাপ শিশুকে সহিংস পথে ঠেলে দেয়। “কুল” হবার জন্য অনেক কিশোর ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। সঠিক দিকনির্দেশনার অভাব অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে সচেতনতার ঘাটতি দেখা যায়। অতিরিক্ত শাসন বা উদাসীনতা শিশুকে ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে। নৈতিক শিক্ষা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখাতে না পারা বড় ব্যর্থতা। সমাধান কী? পরিবারে ভালোবাসা ও সংবেদনশীলতা ফিরিয়ে আনা। শিশুর অনুভূতির প্রতি যত্নবান হওয়া। সহিংস মিডিয়া থেকে সচেতন দূরত্ব বজায় রাখা। বিদ্যালয়ে ইতিবাচক পরিবেশ ও মানসিক সহায়তা নিশ্চিত করা। শিশুর বিকাশ সম্পর্কে অভিভাবকের সচেতনতা বৃদ্ধি। সন্তান মানুষ করা শুধু দায়িত্ব নয়, এটা একটি শিল্প। মানবিক সমাজ গঠনে আমাদের প্রত্যেকের সচেতন ভূমিকা অপরিহার্য।
মন্তব্য (০)