যুক্তরাষ্ট্রে বিচারিক হেফাজতে আটক ব্যক্তি আদালতের মাধ্যমে নিজের আটকের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন—এই সাংবিধানিক অধিকারটির নাম ‘হ্যাবিয়াস কর্পাস’। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এই অধিকার স্থগিত করার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে, এমন মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার।মিলার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বিদ্রোহ বা আগ্রাসনের সময় এই অধিকার স্থগিত করার অনুমতি দেয়।” তার এ বক্তব্য এসেছে এমন এক সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ফেডারেল বিচারক অবৈধ অভিবাসীদের আটক ও বিতাড়নের ঘটনাগুলো হ্যাবিয়াস কর্পাস আইনের আওতায় চ্যালেঞ্জ করছেন।সম্প্রতি, একটি আদালত ইসরায়েলের সমালোচনা করে নিবন্ধ লেখার কারণে ছয় সপ্তাহ ধরে আটক থাকা এক তুর্কি ছাত্রকে মুক্তির নির্দেশ দেন। অন্য এক রায়ে, ফিলিস্তিনপন্থী মত প্রকাশের কারণে আটক এক কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে হ্যাবিয়াস কর্পাসের ভিত্তিতে মুক্তি দেওয়া হয়।তবে কিছু আদালত আবার ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানকেই সমর্থন করেছেন। এই পরিস্থিতিতে স্টিফেন মিলার হ্যাবিয়াস কর্পাসকে ‘একটি সুবিধা’ বলে উল্লেখ করেন, এব
ং দাবি করেন, ‘অভিবাসন সংক্রান্ত মামলায় আদালতের এখতিয়ার কংগ্রেস ইতিমধ্যে খর্ব করেছে।’যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিত করার সুযোগ থাকলেও তা ইতিহাসে মাত্র চারবার প্রয়োগ করা হয়েছে—সিভিল ওয়ারে আব্রাহাম লিঙ্কনের সময়, ১৯৪১ সালে পার্ল হারবারে জাপানি হামলার পর হাওয়াইয়ে, ১৯০৫ সালে ফিলিপাইনে এবং ১৯ শতকে কু ক্লাক্স ক্ল্যান দমনকালে।আইনি বিশেষজ্ঞরা মিলারের ব্যাখ্যার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির প্রতি দৃষ্টিপাত করলে এটি স্পষ্ট যে, হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিতের মতো কঠোর পদক্ষেপ বিবেচনায় রয়েছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প নিজেও এই বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।ট্রাম্প সরাসরি হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিতের ঘোষণা না দিলেও, এপ্রিল মাসে বলেন, “আমাদের কাছে কিছু শক্তিশালী পন্থা রয়েছে। এমন একটি পথ আছে, যা তিনজন সম্মানিত প্রেসিডেন্ট ব্যবহার করেছেন। আমরা চাই না, সেই পথে যেতে হোক।”আইন অনুযায়ী, হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিত করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, তবে ট্রাম্প সেটি ছাড়াই উদ্যোগ নেবেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
মন্তব্য (০)