ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামে দ্বিগুণ শুল্ক ঘোষণা ট্রাম্পের: দেশের ইস্পাত শিল্পকে ঘুরে দাঁড় করাতে ৫০% শুল্ক

যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামে দ্বিগুণ শুল্ক  ঘোষণা ট্রাম্পের: দেশের ইস্পাত শিল্পকে ঘুরে দাঁড় করাতে ৫০% শুল্ক Image সংগৃহীত | ছবি: সংগৃহীত
ইমেইল :

ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও শুল্ক নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন। এবার তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর বিদ্যমান ২৫% শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০% করা হবে। এই সিদ্ধান্ত আগামী বুধবার থেকে কার্যকর হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।পেনসিলভেনিয়ার পিটসবার্গে এক নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন, "এই সিদ্ধান্ত আমেরিকার স্থানীয় ইস্পাত শিল্পকে চাঙা করবে এবং চীনের উপর নির্ভরতা কমিয়ে জাতীয় সরবরাহ সুরক্ষিত করবে।"ট্রাম্প আরও দাবি করেন, মার্কিন স্টিল ও জাপানের নিপ্পন স্টিলের মধ্যে একটি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এই অঞ্চলে ১৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসছে। যদিও তিনি পরবর্তীতে সাংবাদিকদের জানান, চূড়ান্ত চুক্তি এখনও অনুমোদন দেননি। এই পদক্ষেপ ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির ধারাবাহিকতা, যা তিনি ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনুসরণ করছেন।স্টিল শ্রমিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “কোনো ছাঁটাই হবে না, কোনো আউটসোর্সিং হবে না, এবং প্রতিটি মার্কিন স্টিল শ্রমিক ৫,০০০ ডলারের বোনাস পাবেন।”স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রে ট্রাম্প ২০১৮ সালেও ২৫% শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যা তিনি "মার্কিন স্টিলকে বাঁচানোর" পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।তিনি বলেন, “৫০% শুল্কে তারা আর পার পাবে না। এবার আমরা আবার পেনসিলভেনিয়ার ইস্পাতকে আমেরিকার মেরুদণ্ডে পরিণত করব।”বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত এক চতুর্থাংশ ইস্পাতই আমদানি করা, যার বেশিরভাগ আসে চীন, ভারত এবং জাপান থেকে। মেক্সিকো ও কানাডার স্টিলের উপর নির্ভরতাও ট্রাম্পের ক্ষোভের কারণ হয়ে উঠেছে।এই ঘোষণার সময় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বৈধতা নিয়ে মামলা চলছে, যদিও স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর আরোপিত শুল্কগুলো মামলার বাইরে রাখা হয়েছে।স্

থানীয় ইউনাইটেড স্টিলওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সদস্য এবং ওয়াশিংটন শহরের মেয়র জোজো বার্জেস বলেন, “এই ঘোষণা আমাদের জন্য ইতিবাচক। আমি ট্রাম্প সমর্থক না হলেও, যে কোনো কিছু যা মার্কিন উৎপাদনকে সমান সুযোগ দেয়, তাতে আমি একমত।”তবে আন্তর্জাতিক পরিসরে ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনসহ অনেক দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে।চীনও পাল্টা অভিযোগ এনেছে যে যুক্তরাষ্ট্র তথাকথিত শুল্ক যুদ্ধের চুক্তি লঙ্ঘন করছে। যদিও ট্রাম্প চীনকে দায়ী করে বলেন, “চুক্তি ভাঙা হয়েছে,” চীন এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে “বৈষম্যমূলক নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহ্বান” জানায়।বিশ্ব ইস্পাত সংস্থার ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, চীন বিশ্বে সর্বোচ্চ পরিমাণ ইস্পাত উৎপাদন করে – মোট বৈশ্বিক উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি।ট্রাম্প বলেন, “আপনার যদি ইস্পাত না থাকে, আপনি দেশকেও টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। দেশ না থাকলে সেনাবাহিনী কীভাবে গড়বেন? তখন কি চীন থেকে ট্যাংকের জন্য ইস্পাত আনতে যাব?”ট্রাম্পের ঘোষণায় বলা হয়, জাপান ১৪ মাসে ১৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। সেইসঙ্গে ইউএস স্টিলের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রেই থাকবে, পরিচালনায় মার্কিন নাগরিকরা থাকবেন, এবং দশ বছরের জন্য উৎপাদন কমানো হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এমনকি দশ বছর পরও উৎপাদন কমানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের অনুমোদন ছাড়া করা যাবে না।তবে এখনো নিপ্পন স্টিল এবং ইউএস স্টিলের মধ্যে চুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো নিশ্চয়তা আসেনি। ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি মার্কিন স্টিল শিল্পের প্রতি এক ধরনের জাতীয়তাবাদী প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যার মাধ্যমে তিনি দেশীয় উৎপাদনকে উজ্জীবিত করতে চাইছেন। তবে এর আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রভাব এখনও অনিশ্চিত।

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর