ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা ও সংঘাতময় পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তেহরান থেকে প্রাথমিকভাবে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত বাংলাদেশিদের স্থলপথে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর করাচি হয়ে দুবাই কিংবা অন্য কোনো রুটে আকাশপথে তাদের দেশে ফেরানো হবে।দূতাবাসের সহায়তায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া শুরুতেহরানে অবস্থান করা প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির মধ্যে ১০০ জন এরই মধ্যে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের একটি বড় অংশ তেহরান ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন, যেখানে দূতাবাস প্রয়োজন অনুযায়ী আবাসন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
নজরুল ইসলাম জানান, “বর্তমানে প্রায় ৫০ জন বাংলাদেশি তেহরান থেকে সরে গেছেন। তাঁরা নিজ উদ্যোগে দলবদ্ধ হয়ে নিরাপদে অবস্থান করছেন। সরকার তাদের সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।”টাকা পাঠানোয় সীমাবদ্ধতা, বিকল্প পথ খুঁজছে সরকারইরানে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও চলমান সংঘাতের কারণে সরাসরি টাকা পাঠানোয় জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, “ইরানের সীমান্তবর্তী দেশগুলো থেকে দূতাবাসে টাকা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর মাধ্যমে সহায়তা চালু রাখার কাজ চলছে।”দুই ধাপে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনাসরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে তাঁদের ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত হয়ে করাচি এবং সেখান থেকে আকাশপথে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।তেহরানে বাংলাদেশের দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, “প্রায় ২০০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের ফেরাতে প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক উদ্যোগ ও লজিস্টিক পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।”দূতাবাসের কর্মরত কূটনীতিকরাও নিরাপদেবর্তমানে তেহরানে বাংলাদেশের ৪০ জন দূতাবাস কর্মকর্তা ও কর্মচারীও নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে দূতাবাসের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে বিকল্প স্থানে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।ইরানে মোট বাংলাদেশি দুই হাজারের মতো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইরানজুড়ে প্রায় ২,০০০ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। তবে তেহরানেই বসবাস করতেন প্রায় ৪০০ জন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশিদের কেউ হতাহত হননি, এমন আশ্বস্ত বার্তা দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
মন্তব্য (০)