ব্রেকিং নিউজ :

দৃষ্টিকোণ নিউজ একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, যা সর্বশেষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করে।

আমরা দেশের ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ খবর, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করি।

জেলা

বরিশাল বিভাগে পাঁচ মাসেও বিএনপির পুনর্গঠন নেই, তৃণমূলে হতাশা ও বিভ্রান্তি

বরিশাল বিভাগে পাঁচ মাসেও বিএনপির পুনর্গঠন নেই, তৃণমূলে হতাশা ও বিভ্রান্তি Image প্রতীকী ছবি | ছবি: প্রতীকী ছবি
ইমেইল :

বরিশাল বিভাগে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনের যে উদ্যোগ গত জানুয়ারিতে শুরু হয়েছিল, তা পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি পায়নি। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে আটটি সাংগঠনিক জেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্য থাকলেও এখন পর্যন্ত একটি জেলাতেও সম্মেলন হয়নি।তৃণমূল পর্যায়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেড়েছে গভীর হতাশা। অধিকাংশ জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি না থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে দলীয় শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে এবং মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্বহীনতার কারণে রাজপথে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হচ্ছে না।বর্ষা মৌসুমে সম্মেলন অনিশ্চিত, নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল স্পষ্টবরিশাল মহানগর বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি জেলায় নেতাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধও দানা বেঁধেছে। এখন বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় নেতারা মনে করছেন, এই সময়ের মধ্যে সম্মেলন আয়োজন কঠিন হবে। ফলে আগামী শুষ্ক মৌসুমের আগেই সম্মেলন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।বরিশাল মহানগরের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব এতটাই প্রকট যে, একাধিক পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি বিজ্ঞপ্তি ও কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ৩০টি ওয়ার্ডে এখনো নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি। সদস্যপদ নবায়ন কিংবা নতুন সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে স্থবিরতাগত ২৩ জানুয়ারি কেন্দ্র থেকে বরিশাল বিভাগের আট জেলায় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্মেলন আয়োজনের লক্ষ্যে পাঁচজন কেন্দ্রীয় নেতাকে তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে মনোনীত করা হলেও, তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। সংশ্লিষ্ট জেলার কোনো ইউনিটেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বাস

্তব কার্যক্রম দেখা যায়নি।তৃণমূলে আস্থাহীনতা এবং ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে পড়েছেসাবেক একাধিক জেলা নেতারা জানিয়েছেন, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে অনেক নেতাকর্মী মামলা ও হয়রানির মুখে পড়ে আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে নতুন বাস্তবতায় আবারও তারা সক্রিয় হলেও, দুর্বল কাঠামো এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটির অভাবে নেতৃত্বে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।মহানগরে স্পষ্ট বিভাজন, দ্বন্দ্বের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগবরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ও সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার গত ৫ এপ্রিল নতুন ওয়ার্ড কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আটটি টিম গঠনের ঘোষণা দেন। কিন্তু একই দিন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা নাসরিন পাল্টা বিবৃতি দিয়ে এই উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে দলীয় কোনো কর্মসূচিতেই ডাকা হয় না এবং সদস্য ফরম বিতরণেও অনিয়ম হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন।এদিকে আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আফরোজা নাসরিন তাঁর পদমর্যাদা লঙ্ঘন করে নিজেই কর্মসূচি ঘোষণা করছেন, যা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জুলাইয়ের মধ্যে মহানগরের সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বীকৃতি, সম্মেলন বিলম্বে বাধা ‘আঞ্চলিক প্রভাবশালী নেতারা’বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান জানিয়েছেন, নানা প্রতিকূলতার কারণে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্মেলন শেষ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, “আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যে সব জেলার সম্মেলন শেষ করতে পারব।” তিনি আরও স্বীকার করেন, “আঞ্চলিক প্রভাবশালী নেতাদের প্রভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সেই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেই আমাদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে হবে। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় নেতৃত্বের বিকাশে ভাটা পড়েছে। এখন সম্মেলনের বিকল্প নেই।”

সম্পর্কিত ট্যাগ :

মন্তব্য (০)

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না. প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে *

সম্পর্কিত খবর